সুরজিৎ দেব, গঙ্গাসাগর: সাঙ্গ হল মেলা। গঙ্গাসাগর মেলা (Gangasagar Mela 2024) শেষে লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রীর এখন ঘরে ফেরার পালা। এদিন মেলা শেষে রাজ্য সরকারের ছয় মন্ত্রী-সহ রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা নামলেন সমুদ্র সৈকত সাফাইয়ে। ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সুজিত বসু, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, বঙ্কিম হাজরা ও ইন্দ্রনীল সেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নীলিমা বিশ্বাস, জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা ও সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও-ও এই সাফাই অভিযানে অংশ নেন।
এদিন ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত সাগরমেলায় মোট এক কোটি দশ লক্ষ তীর্থযাত্রী এসে পবিত্র স্নান সেরে কপিল মুনির মন্দিরে পুজো দিয়ে বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছেন। তীর্থযাত্রীদের বেশিরভাগই এসেছেন উত্তরপ্রদেশ, বিহার, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশ থেকে। বিদেশেরও বহু পর্যটক এবার সাগরমেলায় এসে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেছেন। গঙ্গাসাগরের ৬ নম্বর সমুদ্রতটে সাফাই অভিযানে অংশ নিয়ে তাঁর আহ্বান, “সমুদ্রতট পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তুলুন, সাগরসৈকতকে রক্ষা করুন।” তিনি বলেন, “আগে বলা হত সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার। মিথ ভেঙেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন গঙ্গাসাগর বারবার।”
[আরও পড়ুন: ‘ওরা মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, সাজা হবে’, ‘আগুন-সন্ত্রাসী’দের হুঁশিয়ারি হাসিনার]
পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি জানান, এপর্যন্ত মোট ১৩ হাজার ৬৭২ জন তীর্থযাত্রী সাগরমেলায় তাঁদের প্রিয়জনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। তার মধ্যে ১৩ হাজার ৬৫১ জন পুন্যার্থী, পুলিশ ও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অক্লান্ত পরিশ্রমে তাঁদের পরিজনদের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন। ৫১ জনকে কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। এপর্যন্ত মোট ৮ জনকে এয়ার লিফটিং করা হয়েছে। ৪২৩ টি পকেটমারির ঘটনায় ৪০২ টি ক্ষেত্রেই খোয়া যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনায় ৮৭৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৮ জানুয়ারি থেকে এতদিন পর্যন্ত যাঁরা মেলাচত্বর ও সমুদ্রসৈকত সাফাই করে পরিচ্ছন্ন রাখছিলেন তাঁদের কয়েকজনের হাতে তিনি এদিন শংসাপত্র তুলে দেন। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এপর্যন্ত মেলায় অসুস্থতাজনিত কারণে মোট ৯ জন প্রবীণ তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এদিন আরও এক অসুস্থ হয়ে পড়া তীর্থযাত্রীকে সাগরমেলা চত্বর থেকে এয়ার লিফটিং করে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কপিল মুনি আশ্রমের প্রধান জ্ঞানদাস মহন্ত মেলার ব্যবস্থাপনায় অত্যন্ত খুশি। গঙ্গাসাগর মেলার ব্যবস্থাপনায় এদিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেন তিনি। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গাসাগর মেলাকে অনেক সুন্দর করেছেন।” সাগরমেলাকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবিকে সমর্থন জানিয়ে মহন্ত বলেন, “আমিও চাই সাগরমেলা জাতীয় মেলার স্বীকৃতি পাক। আমিও এবিষয়ে অনেকবার প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি।”