সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রামায়ণে আছে, অষ্টাবক্র মুনি মাতৃগর্ভেই বেদজ্ঞান লাভ করেছিলেন। এবার আধুনিক ভারতের বুকে শুরু হল ‘গর্ভ সংস্কার’ (Garbh Sanskar) থেরাপি। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত (Banaras Hindu University) স্যার সুন্দরলাল হাসপাতালের আয়ুর্বেদ (Ayurveda) বিভাগে এই থেরাপির প্রয়োগ শুরু হয়েছে। উদ্দেশ্য গর্ভে থাকা অবস্থাতেই শিশুর মধ্যে মূল্যবোধ গড়ে তোলা।
আয়ুর্বেদের এক অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে এই থেরাপির পরিকল্পনা করা হয়েছে। ‘প্রসূতি তন্ত্র’ নামের বিভাগে এটির প্রয়োগ শুরু করা হয়েছে। সুন্দরলাল হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেট অধ্যাপক এসকে মাথুরের কথায়, ‘‘গর্ভ সংস্কার কোনও নতুন কিছু নয়। প্রাচীন আয়ুর্বেদে এর প্রচলন ছিল। কিন্তু এর কোনও বৈজ্ঞানিক বৈধতা না থাকায় তা গুরুত্ব হারিয়েছিল। এবার হাসপাতালের আয়ুর্বেদ বিভাগে আবার তা শুরু করা হয়েছে।’’
[আরও পড়ুন: বিদেশে হিসেব বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগ, ফের ইডির নজরে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে]
এই ‘গর্ভ সংস্কারে’ ঠিক কী করা হয়? এসকে মাথুর জানাচ্ছেন, মাতৃগর্ভে থাকার সময় শিশুকে যদি ভালো পরিবেশ ও সুন্দর সংগীত শোনানো যায় তাহলে তার মনের উপরে সদর্থক প্রভাব পড়ে। তাই এই সময় মহিলাদের ভালো সংগীত শোনা, সুসাহিত্য পড়া এবং অনুপ্রেরণামূলক ইতিবাচক সিরিয়াল দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়। গর্ভাবস্থায় সঠিক খাদ্যাভ্যাস, যোগব্যায়াম, মন্ত্রোচ্চারণ, সঠিক পোশাক পরা এগুলির উপরেও জোর দেওয়া হয় এই নয়া থেরাপিতে। সব মিলিয়ে এই থেরাপির কেমন প্রভাব গর্ভস্থ শিশুর উপরে পড়ছে তা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে পরে খতিয়ে দেখাও হচ্ছে।
‘প্রসূতি তন্ত্র’ বিভাগের অধ্যাপক ড. অনুরাধা রায় জানাচ্ছেন, আয়ুর্বেদে মোট ১৬ রকমের সংস্কারের কথা রয়েছে। তারই একটি গর্ভ সংস্কার। আগেই শোনা গিয়েছিল, ভারতের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ‘গর্ভ সংস্কার’ বিষয়টিকে সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমা কোর্সের অন্তর্ভুক্ত করতে চলেছে লখনউ বিশ্ববিদ্যালয় (Lucknow University)।
পুরাণে, মহাকাব্যে এমন ধরনের বিষয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। অষ্টাবক্র মুনির মতোই মহাভারতে রয়েছে অভিমন্যুর কথাও। যিনি মাতৃগর্ভেই শিখে ফেলেছিলেন চক্রব্যুহে প্রবেশের কৌশল। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নয়া থেরাপি সেই কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে নতুন করে।