সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যে উলটপুরাণ। দেশের নানা প্রান্তে গো-মাংস গুজবে গণপিটুনির অভিযোগ উঠছে স্বঘোষিত গো-রক্ষকদের বিরুদ্ধে। এবার গো-রক্ষকরাই মার খেলেন। কুড়ি-পঁচিশ জনের দল তাদের লাঠিপেটা করে। জখম হয়েছেন সাতজন। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। ঘটনাস্থল মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর।
[ভারতে হামলার ছক, যোগীর রাজ্যে ধৃত বাংলাদেশের জঙ্গি]
গরু বাঁচাতে এই রাজ্যে আইন বেশ কঠোর। মহারাষ্ট্রে গোমাংস নিষিদ্ধ। পাচারেরও প্রশ্ন নেই। সম্প্রতি গো-মাংস শনাক্তকরণের জন্য মহারাষ্ট্র পুলিশ বিশেষ ধরনের কিট ব্যবহার শুরু করেছে। বজ্র আঁটুনির মধ্যে শনিবার গরু পাচার হচ্ছিল বলে অভিযোগ। গো-রক্ষকদের দাবি সেদিন সন্ধ্যায় আহমেদনগরে একটি টেম্পো করে দুটি এবং ১০টি ষাঁড় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গোটা ঘটনার নেতৃত্বে ছিলেন শিবশঙ্কর রাজেন্দ্র স্বামী নামে এক ব্যক্তি। গত কয়েক মাসে মহারাষ্ট্রে অন্তত ৩০০টি গরু পাচারের ঘটনা তিনি রুখে দেন। এই জন্য তাঁকে ১২ ঘণ্টার পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়। শিবশঙ্কর ওই এলাকার পশু কল্যাণ আধিকারিক হিসাবে পরিচিত। নিজের দায়িত্ব বুঝে নিতে কয়েকজনকে নিয়ে শিবশঙ্কর গাড়ি আটকান। টেম্পোর মালিক ওয়াহিদ শেখ এবং চালক রাজু শেখের সঙ্গে এই নিয়ে তাদের বচসা হয়। তরজার ফাঁকে আচমকা ২৫-৩০ জনের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। ওই ব্যক্তিরা লাঠিসোঁটা নিয়ে শিবশঙ্কর-সহ গো-রক্ষকদের ওপর ঝাঁড়িয়ে পড়ে। লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারের পাশাপাশি তাদের লক্ষ করে পাথরও ছোড়া হয়। সাতজন জখম হন। গণ্ডগোলের ফাঁকে পশুবোঝাই গাড়িটি গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যায়।
[নাগপুরে গো-রক্ষকদের তাণ্ডব, রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মার যুবককে]
ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে তিরিশ জনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, ডাকাতির অভিযোগ আনা হয়েছে। গণ্ডগোলের পর পুলিশি ধরপাকড়ের জেরে থমথমে মহারাষ্ট্রের এই জেলা। গো-রক্ষকদের দৌরাত্ম্য নিয়ে সম্প্রতি একাধিকবার মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার তিনি আবেদন জানিয়েছেন। তারপরও দেশের নানা প্রান্তে গো-মাংস নিয়ে স্রেফ সন্দেহের বশে খুন, মারধর ঘটনা ঘটে চলেছে। এই অবস্থায় আহমেদনগরের ঘটনা বুঝিয়ে দিল পালটা মারের মঞ্চটাও ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছে।
The post উলটপুরাণ! মহারাষ্ট্রে ‘পাচারকারীদের’ হাতে মার খেলেন গো-রক্ষকরাই appeared first on Sangbad Pratidin.