সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপের বিরুদ্ধে ‘জ্বালানি তাস’ ব্যবহার করেছে রাশিয়া (Russia)। পোল্যান্ড এবং বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করতেই নড়েচড়ে বসেছে ইউরোপে। এবার পুতিন প্রশাসনের শর্ত মেনেই গ্যাস ও তেল কেনার জন্য বেশ কিছু ইউরোপীয় জ্বালানি সংস্থা সক্রিয় হয়েছে বলে খবর। তার মধ্যে রয়েছে জার্মানি এবং অস্ট্রিয়ার মতো দেশের সংস্থাও।
[আরও পড়ুন: রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভারতকে লড়িয়ে দিতে বাইডেনের হাতিয়ার QUAD, কী করবে নয়াদিল্লি?]
বুধবার রুশ সরকারি তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী সংস্থা ‘গ্যাজপ্রম’ জানায়, পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাসের জোগান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গ্যাসের দাম মেটাতে ডলার বা ইউরোর পরিবর্তে রুবল ব্যবহার করার দাবি জানিয়েছিল মস্কো। সে জন্য গ্যাজপ্রোমের ব্যাংকে পৃথক অ্যাকাউন্টও খুলতে হবে। তবে সেই দাবিতে কান দেয়নি পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়া। ফলে পড়শি দুই দেশে গ্যাসের জোগান বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া।
বলে রাখা ভাল, ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফলে বিদেশে সঞ্চিত প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলারের মুদ্রাভাণ্ডারে হাত দিতে পারছে না মস্কো। একইসঙ্গে, রাশিয়ার ব্যাংকগুলিকে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের ‘সুইফট’ ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়া হয়। তারপর থেকেই, জ্বালানির দাম রুবলে মেটানোর দাবি জানিয়ে আসছে পুতিন প্রশাসন।
এহেন পরিস্থিতিতে শর্ত না মানলে গোটা ইউরোপে গ্যাসের জোগান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এবং মুখে প্রতিবাদ করলেও শর্ত মানতে বাধ্য হয়েছে রুশ জ্বালানির উপর নির্ভরশীল জার্মানি ও অস্ট্রিয়া। জার্মান সংস্থা ইউনিপার জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই ইউরোপে একটি রুশ ব্যাংকের শাখায় তারা অ্যাকাউন্ট খুলছে। তার মাধ্যমেই জ্বালানির দাম মেটানো হবে। একই বার্তা এসেছে অস্ট্রিয়ার জ্বালানি সংস্থা ওএমভিজেএফ-এর তরফেও।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার এহেন পদক্ষেপে রীতিমতো ক্ষুব্ধ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU)। ইইউ প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েন কড়া ভাষায় অভিযোগ জানিয়েছেন যে, এবার জ্বালানি জোগান নিয়ে ইউরোপকে ব্ল্যাকমেল করছে রাশিয়া। উল্লেখ্য, জার্মানি, ইটালি, ফ্রান্স-সহ ইউরোপের বহু দেশ জ্বালানির জন্য রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল। এবং স্বল্প সময়ে সেই নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও প্রতিদিন জ্বালানির মূল্য বাবদ রাশিয়াকে ৪০ কোটি ডলার দেয় ইউরোপ। ফলে মস্কোর এহেন পদক্ষেপে রীতিমতো অশনি সংকেত দেখছেন অনেকে।