সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) দেখানো পথেই হাঁটছেন তাঁর উত্তরসূরি জো বাইডেন। রিপাবলিকানদের জমানা শেষ হলেও ইরান নীতি যে সেই অর্থে পালটাচ্ছে না তা স্পষ্ট করে তেহরানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি সাফ জানিয়েছেন, দ্রুত পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির শর্ত না মানলে আমেরিকা চুক্তিটিকে পুরোপুরি খারিজ করে দেবে।
[আরও পড়ুন: Taliban Terror: ‘শরিয়ত আইনেই জীবন চলবে আফগানিস্তানে’, সরকার গঠনে পর বার্তা তালিবান সুপ্রিমোর]
বুধবার জার্মানিতে সে দেশের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আফগানিস্তান নিয়ে বৈঠকে বসেন মার্কিন বিদেশ সচিব। সেখানে ইরানের সঙ্গে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ব্লিঙ্কেন বলেন, “আমি কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা (ইরানের জন্য) ধার্য করছি না। কিন্তু আমরা এমন একটি বিন্দুর দিকে ক্রমাগত এগিয়ে চলেছি যেখান থেকে আর এই চুক্তির কোনও লাভ থাকবে না।” এদিন ব্লিঙ্কেন স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে দ্রুত পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির শর্ত না মানলে আমেরিকা চুক্তিটিকে পুরোপুরি খারিজ করে দেবে। অর্থাৎ ফের মার্কিন ও পশ্চিমের দেশগুলির কড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হতে পারে ইরানকে (Iran)। আর তেমনটা হলে দেশটির অর্থনীতি প্রবল চাপে পড়বে। একই সুর শোনা গিয়েছে জার্মান বিদেশমন্ত্রী হাইকো মাসের গলাতেও। তিনিও অভিযোগ করেছেন যে চুক্তির শর্ত মানতে ‘অত্যন্ত বেশি দেরি’ করছে ইরান।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গত মঙ্গলবার একটি রিপোর্ট পেশ করেছে রাষ্ট্রসংঘের পরমাণু গতিবিধি নজরদারি সংস্থা ‘International Atomic Energy Agency’। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, চুক্তির শর্ত মঞ্চে না ইরান। দেশটির আণবিক শক্তি সংক্রান্ত কার্যকলাপ ও নিউক্লিয়ার প্লান্টগুলিতে সংস্থার পরিদর্শনের কাজে বাধা দিচ্ছে তেহরান। বিশেষ করে ইসলামিক দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে ‘কট্টরপন্থী’ ইব্রাহিম রাইসি বসার পর থেকেই সুর পালটেছে দেশটি। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে ইরান ফের আণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, বারাক ওবামা মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ইরানের সঙ্গে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল আমেরিকা, ব্রিটেন, চিন, ফ্রান্স ও রাশিয়া। ২০১৫-তে হওয়া এই চুক্তির শর্তানুযায়ী, তাদের যে কোনও রকমের পরমাণু কার্যক্রম বন্ধ রাখবে ইরান। প্রয়োজনে তাদের যে কোনও পারমাণবিক উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে নজরদারি চালাতে পারবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন বা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি। পরিবর্তে ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে মোটা অঙ্কের ত্রাণ পাঠাবে আমেরিকা। কিন্তু ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি অভিযোগ করেন শর্ত না মেনে গোপনে আণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে ইরান। কিন্তু ক্ষমতায় এসে ফের সেই চুক্তি বলবৎ করার চেষ্টা করছেন বাইডেন।