সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: অবশেষে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান (Ghatal Master Plan) বাস্তবায়নের দিকে সামান্য অগ্রগতির ইঙ্গিত মিলল। মঙ্গলবার রাজ্যের ৯ সদস্যের প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাতে রাজ্য সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত (Gajendra Singh Shekhawat)। রাজ্যের সব দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস মিলেছে নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান ডঃ রাজীব কুমারের তরফেও। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাজ্যের প্রতিনিধিরা সংশয়ে। তাঁদের বক্তব্য, কেন্দ্রের তরফে আশ্বাস আগেও মিলেছিল। কাজের কাজ হয়নি। তাই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না।
বর্ষার আগেই বন্যা। ঘাটালের এই দীর্ঘদিনের সমস্যা দূর করতে কেন্দ্র ও রাজ্যের সমন্বয়ের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজে। তাঁর নির্দেশেই এদিন রাজ্যের ৫ মন্ত্রী, দুই সাংসদ এবং দুই বিধায়ক কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত এবং নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমারের সঙ্গে দেখা করেন। বৈঠক শেষে রাজ্যের প্রতিনিধিদের তরফে সুখেন্দুশেখর রায়, মানস ভুঁইঞারা (Manas Bhunia) দাবি করেন, বৈঠক ফলপ্রসূ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন। অন্তত ২০১৬ সালের পর প্রথমবার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আলোচনা তো হল।
[আরও পড়ুন: TMC in Tripura: ত্রিপুরায় সবচেয়ে জনপ্রিয় দল তৃণমূল! প্রদ্যোত মাণিক্যর সমীক্ষায় চাঞ্চল্যকর তথ্য]
তবে, সেই আশ্বাসে যে তাঁরা সন্তুষ্ট নন, সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন মানস ভুঁইঞারা। তাঁদের বক্তব্য, না আঁচালে বিশ্বাস নেই। নিয়ম অনুযায়ী বন্যা মোকাবিলায় মোট খরচের ৭৫ শতাংশ করার কথা কেন্দ্রের। রাজ্যের করার কথা ২৫ শতাংশ। তৃণমূলের দাবি, ঘাটালের সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ৫০ শতাংশ খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই হিসাব অনুযায়ী, ঘাটালের সমস্যার জন্য মোট যে ১,২৩১ কোটি টাকা খরচ করার কথা, তার মধ্যে রাজ্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বেশি খরচ করে ফেললেও, কেন্দ্রের তরফে এক টাকাও আসেনি। কেলেঘাই-কপালেশ্বরীর ক্ষেত্রেও একইভাবে অর্ধেকের বেশি টাকা খরচ করে ফেলেছে রাজ্য। কিন্তু, কেন্দ্রের তরফ দেওয়া হয়েছে সামান্য টাকাই।
[আরও পড়ুন: বিজেপির বৈঠকে ‘অপমানিত’ সুদীপ রায়বর্মন, দলত্যাগ কি স্রেফ সময়ের অপেক্ষা?]
রাজ্যের প্রতিনিধিদের অভিযোগ শুনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং নীতি আয়োগের (Niti Ayog) ভাইস প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এমনটা কেন হয়েছে সেটা তাঁরা খতিয়ে দেখবেন। উপরন্তু, আগামী দিনে রাজ্যের বন্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ খরচ কেন্দ্রীয় সরকার করবে বলে আশ্বাসও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। তবে, রাজ্যের মন্ত্রী সাংসদরা বলছেন শুধু প্রতিশ্রুতিতে কাজ হবে না। বাস্তবায়ন চায়।