বাবুল হক, মালদহ: বাবা ঝালমুড়ি বিক্রেতা। তাঁর মেয়ে সারিফা খাতুনই মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম। মেয়ের সাফল্যে আনন্দে আত্মহারা হতদরিদ্র বাবা-মা। সরকারি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
মালদহের (Malda) ভাদোগ্রামের বাসিন্দা সারিফা খাতুন। বাবা উজির হোসেন পেশায় ঝালমুড়ি বিক্রেতা। তবে তাতে সংসার সামলানো দায়। ফলে মাঝেমধ্যে বাড়তি উপার্জনের জন্য অন্যের বাড়ির ছাদ ঢালাইয়ের কাজও করেন উজির। অর্থের টানাটানির মধ্যে ছেলে-মেয়েদের পড়ানো কার্যত দায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে অর্থকে কখনও বাধা মনে করেনি সারিফা। ইচ্ছাশক্তির জোরে অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছে সে। হাই মাদ্রাসার পরীক্ষায় ৮০০ এর মধ্যে পেয়েছে ৭৮৬। কিন্তু ভাল ফল করলেও কীভাবে এরপর পড়াশোনা চলবে তা ভেবে দিশেহারা সারিফার পরিবারও। মেয়ের ফল জেনে কেঁদে ভাসালেন বাবা। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যদি সাহায্য করেন তাহলে মেয়ের পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।”
[আরও পড়ুন: ‘ঢিল ঠিক জায়গায় পড়েছে’, বিচারব্যবস্থা ইস্যুতে রাজ্যপালকে ফের খোঁচা অভিষেকের]
কী ইচ্ছে সরিফার? ভবিষ্যতে কী হতে চান তিনি? সরিফা ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চান। কিন্তু কীভাবে সম্ভব, এখনও তা অজানা তাঁর। এদিকে উত্তর মালদহের ভাদো এলাকার বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসার (Battala Adarsha High madrasah) ছাত্রী সারিফার এই সাফল্যে খুশি এলাকাবাসী থেকে শিক্ষক মহলও।
তবে শুধু সারিফাই নয়, মাদ্রাসা বোর্ডের ফাইনাল পরীক্ষায় এবার জয়জয়কার মালদহের। প্রথম থেকে টানা পঞ্চম স্থান পর্যন্ত দখল করে নিয়েছে মালদহ জেলার পরীক্ষার্থীরা। মাদ্রাসা বোর্ডের প্রকাশিত ‘টপ টেন’ তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে রাজ্যের ১৫ জন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনই মালদহের। রাজ্যে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসারই ছাত্রী ইমরানা আফরোজ। তার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭৫। ইমরানার বাবা শিক্ষকতা করেন। এই বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসার আরও দু’জন রাজ্যে মেধাতালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। তাঁরা হল, মাহিদা খাতুন ও আঞ্জুমানারা খাতুন। দু’জনেই ৭৬৩ করে নম্বর পেয়ে যুগ্ম দশম স্থান অধিকার করেছে।