বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: রীতিমতো সমাবেশ করে পাহাড়ের তিন আসনে প্রার্থী ঘোষণার প্রস্তুতি নিতে চলেছে বিনয় তামাংপন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (GJM)। চলতি সপ্তাহেই ওই সমাবেশ হতে পারে। মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি বিধানসভা এলাকা থেকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে একাধিক নামের তালিকা জমা পড়েছে। স্ক্রিনিং কমিটি সবদিক খতিয়ে দেখে সেই তালিকা থেকে যে নাম চূড়ান্ত করবে, সেই নামই দার্জিলিংয়ের সভা থেকে ঘোষণা করা হবে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির (বিনয়পন্থী) সভাপতি বিনয় তামাং কর্মীদের উদ্দেশ্যে জানিয়েছেন, প্রার্থী কে হবেন, সেটা ভেবে লাভ নেই। তিনটি বিধানসভা আসনেই পাহাড়ে কাজ করার মতো যোগ্য ব্যক্তিকে প্রার্থী করা হবে। ১৫ মার্চের পর বড় সমাবেশ করে তিন প্রার্থীর নাম এক জায়গা থেকে ঘোষণা করা হবে।
এদিকে মোর্চার বিনয়পন্থী শিবির এককভাবে লড়াইয়ের কথা বললেও বিমল গুরুং সাফ জানিয়েছেন, তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে তিনি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তৃণমূলকে সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। বিনিময়ে তাঁরা ডুয়ার্স ও সমতলের ১৬ টি আসনে তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার করবেন। মোর্চার বিনয়গোষ্ঠী নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সমাবেশে সেটা সাধারণের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে। পাহাড়বাসীর সমস্যার কথা-সহ আগামিদিনের কর্মসূচির কথা থাকবে সেখানে। প্রার্থীরা জয়লাভ করলে পাঁচ বছরে ওই কাজগুলো করবেন।
[আরও পডুন: নন্দীগ্রাম দিবসে ‘ভূমিপুত্র’ শুভেন্দুকে এলাকায় ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি, চরম উত্তেজনা]
ইতিমধ্যে তিন বিধানসভা কেন্দ্রের বুথ স্তরে সভা শুরু করেছেন বিনয়পন্থী নেতারা। প্রার্থী ঘোষণা না হলেও মূলত সাংগঠনিক আলোচনা চলছে। বিনয় তামাং নিজে তিন বিধানসভা এলাকায় ঘুরে সভা করছেন। সম্প্রতি তিনি কার্শিয়াংয়ের বৈঠকে দলের নেতা-কর্মীদের জানিয়ে দেন, এখন ঘুম বন্ধ করে মানুষের দুয়ারে গিয়ে বিভ্রান্তি মুছতে হবে। কী সেই বিভ্রান্তি? মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত বিমল গুরুং পাহাড়ে পৌঁছে যে সমস্ত কথা বলছেন, সেটারই জবাবদিহি চলছে। সাধারণ ভোটারদের সামনে বিমল গুরুংয়ের নাশকতামূলক আন্দোলন শুরুর পর পালিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরছে মোর্চা নেতৃত্ব।
[আরও পডুন: ‘শুভেন্দুকে শেষ করতেই নন্দীগ্রামে প্রার্থী মমতা’, লকেটের সামনে বিস্ফোরক শিশির]
পাশাপাশি মনে করানো হচ্ছে, ধ্বংসের পথ থেকে বিনয়-অনীতরা কীভাবে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে উন্নয়নের পথ সুগম করেছেন।বিনয় তামাং কর্মীদের লোকসভা ভোটের বুথ ভিত্তিক ফলাফল পর্যালোচনা করে কৌশল ঠিক করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানান, নীরব ভোটাররা দলের কাজ দেখে ভোট দেবে। তিন বছরে তাঁদের নেতৃত্বে উন্নয়নের অনেক কাজ হয়েছে। এটা সামনে রেখেই ভোট চাইতে হবে। তাঁর কথায়, “এবারের বিধানসভা নির্বাচন পাহাড়বাসীর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গোর্খা ঐক্য রক্ষা করতে হবে। জাতীয় রাজনীতিতে নতুন মোড় আনবে বাংলার নির্বাচনী ফলাফল। এই পরিস্থিতিতে নিজস্ব দাবি আদায়ের জন্য সচেতন হতেই হবে।”