সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পর্দার শোলে কিম্বা চম্বল ডাকাতদের নিয়ে ব্যান্ডিট কুইন। না, কোনওটির সঙ্গেই মেলাতে চাইবেন না। বরং দুষ্কৃতী দুনিয়ার একেবারে অন্য একটি দিকে আলো ফেলেছেন ডিরেক্টর অভিষেক চৌবে। ছবির নাম – ‘সোনচিড়িয়া।’ ২ ঘণ্টা ২৩ মিনিটে মান সিং, লখনা, ইন্দুমতীদের নিয়ে চম্বলের প্রেক্ষাপটে টানটান গল্প বলে এই সিনেমা।
[দর্শকদের মন কতটা ছুঁতে পারল ‘লুকাছুপি’?]
চম্বলের এক ডাকাতদল এবং তাদের কার্যকলাপ সোনচিড়িয়ার মূল কাহিনি। মান সিং অর্থাৎ মনোজ বাজপেয়ী ডাকাতদলের নেতা। অন্যান্য দুষ্কৃতীদের মতোই উচ্ছৃঙ্খল, কঠোর জীবনযাপন। সাধারণের উপর অত্যাচার, লুঠপাট তাদের নিত্যদিনের কাজ। কিন্তু দিনশেষে এই মান সিং পাপ-পুণ্য নিয়েও ভাবিত হন। পরিত্রাণের উপায় খুঁজতে সচেষ্ট হন। তাঁর বিবেক তাঁকে দিয়ে এসব ভাবায়। তবে মান সিংদের একটা আলাদা জগত আছে, রাজত্ব আছে। যেখানে প্রতিশোধই একমাত্র সমাধান। যে জগতে শ্বশুরের অত্যাচার সইতে হয় পুত্রবধূকে। যেখানে উচ্চবর্ণের ব্যক্তি নিম্নবর্ণের নাবালিকাকে ধর্ষণের পরও খুল্লামখুল্লা ঘুরে বেড়ালে, কোথাও কোনও আইনের বাধা নেই। আর ছবির এই অংশেই মোড় ঘুরে যায়। ধর্ষিত নাবালিকাকে গ্রাম থেকে উদ্ধার করে ইন্দুমতী তোমর (ভূমি পেড়নেকর)। রুখে দাঁড়ায় ডাকাত সর্দারদের বিরুদ্ধে। অন্য রাস্তা দেখায়। সিনেমার শেষাংশে মান সিং রূপী মনোজ বাজপেয়ী, তার দলের অন্যতম সদস্য লখনা অর্থাৎ সুশান্ত সিং রাজপুতরা বিবেকের দংশনে জর্জরিত হন। এতজন নিরীহ মানুষের উপর অত্যাচার চালানোর পাপবোধ বিদ্ধ করে তাঁদের। আত্মসমর্পণ করতে চান। কিন্তু বাধা পান। কারণ, ততদিনে জেনে গিয়েছেন, তাদের জীবন ওই চম্বলের খাত ঘিরেই সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই জায়গাই তাদের নিয়তি। উড়তা পাঞ্জাবের পর অভিষেক চৌবের এই সিনেমা শেষ হয় মুক্তি অণ্বেষণের মধ্যে দিয়ে। আর এখানেই ছবির নামকরণের সার্থকতা।
[রান্নার মাঝে সম্পর্কের রসায়ন ‘আহা রে’]
শ্রেণিবৈষম্যের রুক্ষ বাস্তব, শাসক-শাসিতের চিরকালীন দ্বন্দ্ব, সংগ্রাম উঠে এসেছে অভিষেক চৌবের এই ছবিতে। চিত্রনাট্যে ঠাস বুনোট। সংলাপ কাটাকাটা, ধারাল। গল্প যদি সিনেমার মূল চালিকাশক্তি হয়, তাহলে মনোজ বাজপেয়ী, সুশান্ত সিং রাজপুত, ভূমি পেড়নেকর, রণবীর শোরেরা নিজেদের অভিনয় প্রতিভা দিয়ে সিনেমাটিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন মসৃণভাবে। ‘দম লাগাকে হাইসা’য় নিজেকে চিনিয়েছিলেন ভূমি। আর সোনচিড়িয়ায় বুঝিয়ে দিলেন, তিনি লম্বা রেসের ঘোড়া। অভিষেকের কাছে ভাল কাজের প্রত্যাশা আরও বাড়ল দর্শকদের। দৈনন্দিন জীবনের বাইরে কিছুক্ষণের জন্য কল্পজগতে ভাসতে সিনেমা হলে যেতে চাইলে, ‘সোনচিড়িয়া‘কে বাছবেন না। বরং বাস্তব থেকে উঠে আসা চরিত্রগুলোকে রুপোলি পর্দায় দেখা একটা অন্য প্রাপ্তি। ছবিটি ইতিমধ্যেই সমালোচক মহলে প্রশংসিত। আপনিও মিস করবেন না।
The post রুক্ষ বাস্তবের প্রতিচ্ছবি, ঘাত-প্রতিঘাতে দীর্ণ ‘সোনচিড়িয়া’-য় অভিনয় বড় প্রাপ্তি appeared first on Sangbad Pratidin.