সৌরভ মাজি, বর্ধমান: রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাতে যেন কোনও ছেদ নেই। প্রায় রোজই দু’পক্ষ সংঘাতে জড়ান তাঁরা। সোমবার বর্ধমান সফরে গিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে আরও একবার রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)।
গোটা রাজ্যজুড়ে ক্রমশ আইনের অবনতি হচ্ছে বলে বারবার অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল। বুধবারও রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ধনকড়। পুলিশ (Police), সরকারি কর্মী এবং আধিকারিকরা কার্যত রাজনৈতিক দলদাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এর আগেও একাধিকবার বিভিন্ন ক্ষেত্রের সরকারি আধিকারিকদের তলব করেছেন রাজ্যপাল। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গরহাজির ছিল সরকারি আধিকারিকরা। সেই প্রসঙ্গও এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে তুলে ধরেন তিনি। প্রোটোকল মেনে কেউ কাজ করছে না বলেই দাবি তাঁর।
[আরও পড়ুন: দলীয় পতাকা লাগানো নিয়ে ABVP-TMCP সংঘর্ষ, অগ্নিকাণ্ড-বোমাবাজিতে রণক্ষেত্র বাজকুল কলেজ]
জেলা সফরে যাওয়ার পরেও তাঁকে সরকারি আধিকারিকরা যোগ্য সম্মান দেন না বলেও আক্ষেপ জগদীপ ধনকড়ের। এই ইস্যুতে আরও একবার ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour) প্রশাসনিক আধিকারিকদের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি। তবে এত কিছুর পরেও আগে আরও একবার বর্ধমান সফরের কথা বলেন রাজ্যপাল। তৎকালীন জেলাশাসক বিজয় ভারতীর প্রশংসাও করেন। তিনি বলেন, “এর আগেও একবার বর্ধমানে এসেছিলাম আগাম কিছু না জানিয়ে। তখন আগাম খবর না থাকা সত্ত্বেও পূর্ব বর্ধমানের তৎকালীন জেলাশাসক বিজয় ভারতী যিনি বর্তমানে বীরভূমের জেলাশাসক, তখন আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সীতাভোগ, মিহিদানা খাইয়েছিলেন।”
তবে তারপরই তিনি দাবি করেন, বর্তমানে রাজ্যে আইনের শাসন আর নেই। বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে বালি, কয়লা, পাথরের সিন্ডিকেটরাজ চলছে বলেও অভিযোগ তাঁর। এই পরিস্থিতিতে চলতি বছরে আদৌ সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হবে কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেন রাজ্যপাল। কেন্দ্রীয় কৃষক নিধি প্রকল্প চালু না করায় রাজ্যের কৃষকরা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ তাঁর। পাশাপাশি আমফানের (Amphan) ক্ষতিপূরণ আত্মসাৎ করার অভিযোগেও সুর চড়িয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক মোটেও ভাল নয়। বর্ধমান সফরের এই অভিযোগের পর দু’পক্ষের সম্পর্ক যে আরও তলানিতে ঠেকল সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।