সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার লোকসভায় পেশ হচ্ছে না এক দেশ-এক ভোট বিল। প্রাথমিকভাবে বিলটি সোমবার পেশ করা হবে বলে সংসদের সূচিতে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পরে যে চূড়ান্ত কার্যসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে এক দেশ-এক ভোট বিল নেই।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভা সংবিধান (১২৯ সংশোধনী) বিল, ২০২৪, এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আইন (সংশোধনী বিল), ২০২৪ অনুমোদন করে। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেগুলি সাংসদদের কাছে পাঠিয়েও দেওয়া হয়। তারপরই জানা যায়, সোমবার আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল বিলগুলি সংসদে পেশ করবেন। আইনমন্ত্রী বিলগুলি পেশ করার পর তা যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানো হতে পারে আলোচনার জন্য। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এল সরকার। সোমবারের চূড়ান্ত তালিকায় ওই বিলগুলি রাখা হয়নি। সংসদের চলতি অধিবেশন ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফলে শেষ পর্যন্ত এই অধিবেশনে আদৌ বিলটি পেশ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়ে গেল।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কমিটি ‘এক দেশ, এক ভোট’ সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরি করেছিল। এক দেশ, এক ভোট নিয়ে এর আগে প্রতিবাদে মুখর হয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূলের মতো বিরোধী দলগুলি। তাদের যুক্তি ছিল, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয়, সাংসদ এবং বিধায়ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেটুকু বৈচিত্রের সম্ভাবনা রয়েছে, বিজেপির আগ্রাসী প্রচারের মুখে তা ভেঙে পড়তে পারে। দেশের একেক রাজ্যে বিধানসভার মেয়াদ শেষ হয় একেক সময়। একসঙ্গে ভোট করাতে হলে কোনও কোনও রাজ্যের ভোট এগিয়ে আনতে হবে। কোনও কোনও রাজ্যের ভোট পিছিয়ে দিতে হবে। যা পদ্ধতিগতভাবে চরম সমস্যার। শনিবারও তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এ নিয়ে বলেন, “এটা নিয়ে আমাদের সংসদীয় দলের চেয়ারম্যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক সময় সিদ্ধান্ত নেবেন। আগেই আমরা বলেছি, নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান। সবাইকে একসঙ্গে বেঁধে ভোট করা মুশকিল। মাঝে যদি কোনও সরকার পড়ে যায়, তখন কী হবে? এ নিয়ে সংসদে কী ভূমিকা হবে সেটা পরে জানানো হবে।”
বহুদিন ধরেই ‘এক দেশ, এক ভোটে’র পক্ষে সওয়াল করে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কেন্দ্রের যুক্তি, এর ফলে নির্বাচন করার বিপুল খরচে রাশ টানা যাবে। যেমন সরকারের খরচ কমবে, তেমন রাজনৈতিক দলগুলিরও খরচ কমবে। বারবার নির্বাচনের জন্য সরকারি কাজকর্ম, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে থমকে যায়। একসঙ্গে ভোট হলে তা কমে যাবে। ভোটকর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষীদের খাটুনিও কমবে। একসঙ্গে বিধানসভা এবং লোকসভার ভোট হলে ভোটের হার বাড়তে পারে বলেও মত অনেকের। রাজনৈতিক দলগুলিও সারা বছর ভোটপ্রচারের ঝক্কি না থাকায় মানুষের কাজে অনেক বেশি মনোনিবেশ করতে পারবে।