রমনী বিশ্বাস, তেহট্ট: উঠেছিল জেলের জালে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল রানি ভবানীর আমলে। পাঁচশো বছরেরও বেশি সময় ধরে তেহট্টে পূজিতা হন কষ্টিপাথরের দেবীদুর্গা (Gram Banglar Durga Puja 2023)। আজও এই পুজোয় মেতে ওঠেন এলাকার বাসিন্দারা।
এই পুজো ঘিরে রয়েছে এক গল্প। পূজারী অম্লান চৌধুরী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, কম করে প্রায় ৫০০ বছর আগে নদিয়ার (Nadia) থানারপাড়া থানার দোগাছি গ্রামের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বয়ে যাওয়া নদীতে মাছ ধরার সময় এক জেলের জালে ধরা পড়েছিল কষ্টিপাথরের দুটি মূর্তি। তার একটি ছিল মহিষাসুরমর্দিনী, অপরটি বিষ্ণুমূর্তি। কথিত আছে দেবীর স্বপ্নাদেশে রাজবল্লভ সু-পণ্ডিত দ্বারা মূর্তি দুটি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময় অর্ধবঙ্গেশ্বরী হলেন মাতা রানি ভবানী। তাঁকে এলাকার মানুষ কষ্টিপাথরের মূর্তির কথা জানায়। পরবর্তীতে দোগাছি গ্রামে বিষ্ণুপুরের ঘরানার ধাঁচে ছোট্ট ইট দিয়ে অপূর্ব টেরাকোটা মন্দির তৈরি করে মূর্তি দুটি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: রথীন ঘোষের বাড়িতে সাড়ে ১৯ ঘণ্টা ম্যারাথন তল্লাশি ইডির, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে’, দাবি মন্ত্রীর]
শুধু তাই নয়, দুর্গাপুজো উপলক্ষে রাজকোষ থেকে দুটাকা দশ আনা ও সারা বছর নানা পুজোর খরচের জন্য চার টাকাও পাঠাতেন তিনি। মন্দির সংস্কার ইত্যাদি নানা খরচের জন্য একশো বিঘা জমিও দান করেছিলেন। বর্তমানে মন্দির এলাকায় দুই কাঠা জমি ছাড়া বাকি সব বেদখল হয়ে গিয়েছে। আগে এই পুজো ঘিরে বিশাল মেলা বসত এলাকায়। দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসতেন সেখানে। কথিত আছে, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ওই পুজোর নাম রাখা হয়েছিল রাজবল্লভী পুজো। মূল মন্দির সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবলুপ্ত হয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা একটি ঘরে মূর্তি দুটিকে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করেন। সেই মন্দিরও ভেঙে যাওয়ার কারণে বাংলার ১৪২১ সালে এলাকার মানুষের সংগৃহীত অর্থে নতুন করে মন্দির তৈরি করে নতুন উদ্যোমে পুজো শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই এবছরের পুজোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে।