সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হয় সন্তানের জন্ম দাও, নইলে আমাদের পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাও। ছেলে-বউমার বিরুদ্ধে এমন মামলাই করলেন বাবা-মা। হরিদ্বারের (Haridwar) দম্পতির অভূতপূর্ব মামলায় গোটা দেশে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কিন্তু ছেলে-বউমার বিরুদ্ধে এমন মামলা করলেন কেন বাবা-মা?
উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) ওই দম্পতির দাবি, পড়াশোনার জন্য ছেলেকে আমেরিকায় পাঠিয়েছিলেন তাঁরা। এর ফলে তাঁদের যাবতীয় সঞ্চয় শেষ হয়ে যায়। এখন চরম আর্থিক সংকটে ভুগছেন। বাবা সঞ্জীবরঞ্জন প্রসাদের (SR Prasad) বক্তব্য, “২০১৬ সালে ছেলের বিয়ে দিয়েছি। ছেলে হোক বা মেয়ে আমাদের সমস্যা নেই। আমরা নাতি-নাতনির মুখ দেখতে চাইছে।” অথবা ছেলে-বউমাকে দিতে হবে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ।
[আরও পড়ুন: জাতীয় সড়কে উলটে গেল ১০ লক্ষ টাকার মদবোঝাই ট্রাক, হামলে পড়ল সুরাপ্রেমীরা]
ছেলেকে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার পরেও এখন তাঁদের আর্থিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন সঞ্জীবরঞ্জন। তিনি বলেন, “আমার যাবতীয় সঞ্চয় ছেলের পিছনে খরচ করেছি। তাঁকে আমেরিকায় পড়িয়েছি। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি করেছি। এখন আর্থিক সংকটে ভুগছি। হাতে একটা পয়সা নেই। সে জন্যই ছেলে-বউমা, দু’জনের থেকে আড়াই কোটি করে চেয়েছি।”
এই বিষয়ে মামলাকারীর আইনজীবী বক্তব্য, এই মামলায় সমাজ বাস্তবতা প্রকাশ্যে এসেছে। ছেলের প্রতি যেমন দায়বদ্ধতা থাকে বাবা-মার, তেমনই সময় হলে বাবা-মার দেখভালের দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছেলের। আইনজীবী অরবিন্দ কুমার শ্রীবাস্তব (Arvind Kumar Srivastava) বলেন, “এই মামলা সমাজের সত্যিটা সামনে এনেছে। আমরা সন্তানদের জন্য সর্বস্ব দিয়ে দিই। যাতে তাঁরা জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়, ভাল চাকরি পায়। সন্তানেরও উচিত বাবা-মাকে দেখভাল করা। এক্ষেত্রে বাবা-মা দাবি করেছেন, হয় এক বছরের মধ্যে ছেলে-বউমাকে সন্তানের জন্ম দিতে হবে, অথবা ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।”
[আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল কোটি কোটি টাকা, দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার ঝাড়খণ্ডের IAS]
মামলাকারীদের আইনজীবী জানিয়েছেন, এক সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভেল-এর পদস্থ আধিকারিক ছিলেন সঞ্জীবরঞ্জন প্রসাদ। ছেলে শ্রেয় সাগর একটি বিমানসংস্থায় কাজ করেন। শ্রেয় বিয়ে করেছেন নয়ডার বাসিন্দা শুভাঙ্গী সিংহকে। বিয়ের পর প্রায় বছর ছয়েক অতিক্রান্ত হলেও সন্তানের জন্ম দিতে চান না শ্রেয়-শুভাঙ্গী। এর ফলে বৃদ্ধ দম্পতি চরম একাকিত্বে ভুগছেন। এই বৃদ্ধ বয়সেও তাঁদের মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে। পরিস্থিতির জেরেই আদালতে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন তাঁরা।