সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৬ বনাম ৭৩। এক কিশোরীর সঙ্গে বাকযুদ্ধে নেমে গেলেন প্রৌঢ়। দু’জনেই অবশ্য খ্যাতনামা। তাই তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় নজর থাকে সকলের। পরিবেশ সচেতন সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের খোঁচা, পালটা খোঁচা নিয়ে আপাতত সরগরম টুইটার। সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে মনোজ্ঞ বক্তব্য রাখে গ্রেটা। তাতে সে পরিবেশ বাঁচাতে প্রথম বিশ্বের দেশগুলির উদাসীনতাকে তীব্র কটাক্ষ করে। এরপরই তাঁর উদ্দেশে টুইটারে বেশ জ্ঞানগর্ভ কথা লেখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর তাঁর লেখাতেই তাঁকে পালটা জবাব দিয়েছে ১৬ বছরের এই কিশোরী।
[আরও পড়ুন : “পাক সন্ত্রাস রুখতে সক্ষম ‘ভারত পিতা’ মোদি”, বলছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ]
গলে যাচ্ছে মেরুর বরফ, সমুদ্রতলের উষ্ণতা বাড়ছে, জঙ্গল কাটা পড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের হাত ধরে এমনই আরও নানা অভিশাপ নেমে আসছে পৃথিবীর বুকে। এসব নিয়ে বড়দের মাথাব্যথা না থাকলেও ১৬ বছরের মেয়েটি বেশ চিন্তিত। এই বিপদ রুখতে কিছু একটা করতেই হবে, তা বুঝে গিয়েছিল সুইডেনের কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ। প্রথম সে আন্দোনটা শুরু করে সপ্তাহে একদিন স্কুলে না গিয়ে। শুক্রবার করে সে স্কুলে কামাই করে সুইডিশ পার্লামেন্টের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাত। তার এই অভিনব প্রতিবাদ দেখে থমকে দাঁড়াতেন পথচারীরাও। গ্রেটা থুনবার্গকে দেখে পরিবেশ সচেতনতায় এগিয়ে আসে আরও কয়েকজন স্কুলপড়ুয়া। তারাও যোগ দেয় এই আন্দোলনে। প্রথমদিকে কিশোর-কিশোরীদের এই উদ্যোগ ততটা প্রচারের আলোয় আসেনি। তবে গ্রেটা থুনবার্গের কীর্তি সত্যিই নজর কাড়ে সকলের। কিছুদিনের মধ্যেই থুনবার্গ একটি কায়াকে চড়ে বেরিয়ে পড়ে এই সচেতনতা প্রচারে।
এই বয়সে সুইডিশ কন্যার সচেতনতা দেখে রাষ্ট্রসংঘে বক্তব্য পেশের সুযোগ করে দেওয়া হয়। সেখানে নিজের টানটান বক্তব্যে সকলকে মুগ্ধ করে গ্রেটা থুনবার্গ। আর তারপরই তার উদ্দেশে টুইটারে আপাত নিরীহ ভাষার আড়ালে কিছুটা কটাক্ষ করতে শুরু করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি লেখেন, ‘ওকে দেখে মনে হয়, খুব সুখী একজন মেয়ে। সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যত। ওকে দেখে ভাল লাগল!’ ট্রাম্পের টুইট নজর এড়ায়নি থুনবার্গের। সেও টুইটারে নিজের পরিচয়ের জায়গাটি পালটে দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের লেখার রেশ টেনে সেও লেখে – ‘একজন সুখী মেয়ে, যার খুব উজ্জ্বল ভবিষ্যত’।
তবে শুধু টুইটযুদ্ধ থেকেই নয়। গ্রেটা থুনবার্গের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বরাবর একটা চোরা বিরোধিতা আছে। সুইডিশ কিশোরী মনে করে, ট্রাম্পের মতো প্রথম বিশ্বের নেতাদের জন্যই জলবায়ু পরিবর্তনের অভিশাপ বয়ে বেড়াতে হচ্ছে গোটা বিশ্বকে। রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে যখন ট্রাম্প বক্তৃতা দেওয়ার জন্য উঠছিলেন, তখন গ্রেটা তাঁর দিকে বেশ কড়া দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল। বিশ্বের অত বড় মঞ্চে হাজারও ক্যামেরার সামনে তা ধরা পড়েছে। এমনকী এই দৃশ্য বেশ ভাইরালও হয়েছে। তারপর এই টুইট, পালটা টুইট। বোঝাই যাচ্ছে, পরিবেশ সচেতন সুইডিশ কিশোরীও ট্রাম্পকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলছে। তার আরও কারণ আছে অবশ্য। ট্রাম্প নিজেই দাবি তুলেছিলেন, তিনি অনেক ভাল কাজের জন্যই নোবেল পুরস্কার পেতে পারেন। এদিকে আবার গ্রেটা থুনবার্গও তার সচেতনতা প্রসারের এই উদ্যোগের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে। তাই তাকেও সম্ভবত প্রতিপক্ষ বলে মনে করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
[আরও পড়ুন : ড্রোন হামলার বদলা নিতে ইয়েমেনে সৌদির বিমান হানা, মৃত সাত শিশু-সহ ১৬]
The post গ্রেটা থুনবার্গ বনাম ডোনাল্ড ট্রাম্প, পরিবেশ নিয়ে চোরা বাকযুদ্ধে সরগরম টুইটার appeared first on Sangbad Pratidin.