শেখর চন্দ্র, আসানসোল: কয়লা পাচার (Coal Scam) মামলায় ধৃত ৭ ইসিএল (ECL) কর্তার জামিনের আরজি খারিজ। তাদের পাঁচদিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল আসানসোলের সিবিআই আদালত। আগামী ১৮ তারিখ তাদের আবার আদালতে তোলা হবে। গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, “ইডি, সিবিআই যে নিরপেক্ষ আগে তার প্রমাণ দিক।”
এদিন বিচারকের কাছে সিবিআইয়ের আইনজীবী আশিস মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, এই আধিকারিকদের সঙ্গে বেআইনি কয়লার কারবারি অনুপ মাজি ওরফে লালার সরাসরি টাকার লেনদেনের সম্পর্ক ছিল। কোটি টাকার উপর সেই লেনদেন। কোথায় সেই টাকা নিয়েছিলেন? এখন সেই টাকা কোথায় রাখা আছে? সেই সমস্ত তথ্য জানতে ধৃত আধিকারিকদের হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন বলে দাবি করেন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা।
[আরও পড়ুন: অধীরের ডাকে সাড়া, SSC ইস্যুতে কংগ্রেসের সঙ্গে আন্দোলনে নামবে সিপিএম]
যদিও অভিযুক্তদের আইনজীবী আশিসকুমারের দাবি, ওই ইসিএল আধিকারিকদের বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অফিস ও বাড়িতে তল্লাশি করা হয়েছে। কিন্তু আয় বহির্ভূত সম্পত্তির হদিস সিবিআই দেখাতে পারেনি। যেহেতু এই মামলাটি এখন হাই প্রোফাইল এবং এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রয়েছে, তাই এই সক্রিয়তা বলেই দাবি অভিযুক্তদের আইনজীবীদের। দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর বিচারক জামিনের আবেদন খারিজ করে পাঁচ দিন সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন।
কয়লা পাচার মামলায় তদন্তে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হন ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ড লিমিটেডের প্রাক্তন ও বর্তমান জিএম-সহ ৭ আধিকারিক। বুধবার কলকাতার নিজাম প্যালেসে সিবিআয়ের আর্থিক তছরুপ দমন শাখার অফিসে রাত পর্যন্ত সাতঘণ্টা ধরে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ হয়। তারপর ওই ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার কলকাতা নিজাম প্যালেস থেকে তাঁদের সড়ক পথে আনা হয় আদালতে। প্রসঙ্গত, এই মামলায় বিনয় মিশ্রর ভাই বিকাশ মিশ্র-সহ চার কয়লা মাফিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে কয়লা কারবারিরা গ্রেপ্তার হলেও ইসিএলের কোনও কর্তা গ্রেপ্তার হয়নি। এটাই প্রথমবার।
[আরও পড়ুন: প্রাইমারি টেট নিয়োগ দুর্নীতি: তদন্ত কতদূর, CBI-এর কাছে রিপোর্ট তলব আদালতের]
ধৃতদের মধ্যে রয়েছে বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার এসসি মৈত্র। পাশাপাশি ইসিএলের তিন প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিজিৎ মল্লিক, এবং তন্ময় দাস। এছাড়াও তিনি নিরাপত্তা আধিকারিক মুকেশ কুমার, রিঙ্কু বেহারা ও দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। অভিযোগ,মোটা অর্থের বিনিময়ে কয়লা পাচারকারীদের সুবিধা পাইয়ে দিয়েছে তারা । এদের প্রত্যক্ষ মদতেই আসানসোল, দুর্গাপুর, পুরুলিয়া বাঁকুড়া-সহ বিভিন্ন এলাকার খনি থেকে কয়লা তুলে পাচার করা হয়েছে বলে দাবি।
এদিকে এই গ্রেপ্তারি ও দুই বিধায়ককে সিবিআই তলব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, “ইডি, সিবিআই যে নিরপেক্ষ আগে তার প্রমাণ দিক। ঘরে চুরি হলে নিরাপত্তারক্ষীদের প্রশ্ন করেন, নাকি প্রতিবেশীকে বলেন। কোলিয়ারির দায়িত্বে তো থাকে সিআইএসএফ, কেন্দ্রের আওতাধীন। তাদের বলুন। আমরা আমাদের কাজ করব, সিবিআই সিবিআইয়ের কাজ করুক।”