গৌতম ব্রহ্ম : লক্ষ্মী দলুই। বয়স ৪৫ বছর। অবস্ট্রাকটিভ লাং ফাংশন। ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮। মানস দাস। বয়স ২৪। নর্মাল লাং ফাংশন। ২১ নভেম্বর, ২০১৮। অঞ্জলি সিংহ। বয়স ৩৯। নর্মাল লাং ফাংশন। ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮। এগুলি সব ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের লাং ফাংশন টেস্ট বা স্পাইরোমেট্রি টেস্টের রিপোর্ট।
এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই রোগীর অপারেশন হয়েছে। কারও চলেছে কেমো থেরাপি। যে কোনও অপারেশনের আগেই এই ‘পালমোনারি ফাংশন টেস্ট’ জরুরি। অথচ, আতঙ্কের বিষয় হল, এই পরীক্ষা করছেন একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। আর সেই রিপোর্টের নিচে স্বাক্ষর করছেন একজন নন-মেডিক্যাল অফিসার। দিনের পর দিন এমনই কাণ্ড চলছে হাজরার চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালে। ডাক্তার ছাড়াই চলছে পালমোনারি ফাংশন টেস্ট। পালমোনলজিস্ট তো নেই-ই, বক্ষরোগ নিয়ে অভিজ্ঞাসম্পন্ন একজন এমএবিবিএস-ও থাকছেন না সুপারভাইস করার জন্য। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন হাসপাতালের সুপার ডাঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত। জানালেন, “এই পরীক্ষা নন-মেডিক্যাল কর্মীদের দিয়ে করানোর সংস্থান রয়েছে। বাকিটা অধিকর্তা বলতে পারবেন।”
লাং ফাংশন টেস্ট বা পালমোনারি ফাংশন টেস্ট কী?
ফুসফুস কতটা হাওয়া ঢোকাতে পারছে, কতটা বের করতে পারছে, বের করার পর কতটা বাতাস ফুসফুসে রয়ে যাচ্ছে তার মানক পরীক্ষা হল লাং ফাংশন টেস্ট। এর উপর নির্ভর করে অ্যানাস্থেশিস্ট কতটা ওষুধ প্রয়োগ করবেন রোগীর উপর। সার্জন কতক্ষণ ধরে অপারেশন করবেন। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ এই পরীক্ষার রিপোর্ট। অথচ, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ও নন-মেডিক্যাল মানুষকে দিয়ে এই পরীক্ষা করানো ও তার রিপোর্ট লেখানোর পালা চলছে।
[আরও পড়ুন- কালীঘাটে গণপিটুনির ঘটনায় ছেলের পর এবার গ্রেপ্তার বাবাও ]
ডাক্তারদের একাংশের অভিযোগ, এই কারণেই অঙ্কোসার্জনরা ভাল অপারেশন করেও অনেক সময় রোগীকে বাঁচাতে পারছেন না। কেমোথেরাপি চলাকালীনও বিপদ ঘটছে। কারণ, লাং ফাংশন টেস্টের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই ডাক্তারবাবু কেমোর ডোজ ঠিক করেন। এই অনিয়মের জন্যই অন্য হাসপাতালের তুলনায় চিত্তরঞ্জনে ক্যানসার রোগীদের মৃত্যুর হার বেশি, এমন দাবিও করা হয়েছে। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে পালমোনোলজিস্ট নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
The post লাং ফাংশান টেস্ট করছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী! আতঙ্ক চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালে appeared first on Sangbad Pratidin.