ধীমান রায়, কাটোয়া: চলন্ত ট্রেন থেকে নদীতে পড়ে গেলেন গার্ড। আর নদীর চরে মুখ গুঁজে ওভাবেই পড়ে রইলেন ঘন্টার পর ঘন্টা। ব্যাপক চাঞ্চল্য পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামে। রবিবার সকাল ৬.৫০ মিনিট নাগাদ রেলকর্মীদের নিয়ে রামপুরহাট থেকে বর্ধমানের দিকে আসছিল এই বিশেষ ট্রেনটি। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে বোলপুর পেরিয়ে ভেদিয়া স্টেশন ঢোকার আগে অজয় নদের উপর ৩২ ফুঁকো সেতু পার হওয়ার সময়েই কোনওভাবে পড়ে যান শেষ কামরায় থাকা দেবীপ্রসাদ গাঙ্গুলি নামে পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই গার্ড। প্রায় ৫০ ফুট উঁচু থেকে নদীগর্ভে পড়েন তিনি।
নদীর ওই জায়গায় রয়েছে চর। স্বভাবতই সেখানে মুখ গুঁজে পড়ে থাকেন। ট্রেনটি সেতু থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দুরে ভেদিয়া স্টেশনে এসে থেমে যায়। তারপর রেলকর্মীরা সেতুর কাছে তড়িঘড়ি পৌঁছন। ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়। খবর দেওয়া হয় ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের। রেলের আধিকারিকরা ও আরপিএফ বোলপুর থেকে ভেদিয়া চলে আসেন। সকাল থেকে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা ওভাবেই যদিও পড়ে রইলেন ওই গার্ড। রেল থেকে দমকল বাহিনীকে খবর দেওয়া হয়। বোলপুর থেকে সকাল ১০টা নাগাদ দমকল বাহিনী আসে। যদিও দীর্ঘক্ষণ টানাপোড়েন চলে ওই গার্ডকে উদ্ধার করা নিয়ে। কারণ অজয় নদের ওই অংশ বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমান জেলা সীমান্ত এলাকা। শেষে আউশগ্রামের ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশ ও স্থানীয় মানুষদের সহযোগিতায় বেলা ১১টা নাগাদ অজয় নদের চর থেকে উদ্ধার দেবীপ্রসাদবাবুকে। সকলেই বুঝতে পারেন তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ছুরি দিয়ে কোপ, মৃত্যু নিশ্চিত করতে বোমাবাজি, বাঁকুড়ায় তৃণমূল নেতা খুনে চাঞ্চল্য]
তারপর ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমানে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এদিকে, এই ঘটনা নানা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রথমত কীভাবে পড়ে গেলেন ওই গার্ড? এটা কি নিছক দুর্ঘটনা, নাকি আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে নিজেই ঝাঁপ দিয়েছিলেন? দ্বিতীয়ত, সকাল পৌনে সাতটা থেকে টানা নদীর চরে পড়ে থাকার পরেও কেন তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হল না? কেন রেলের কর্মী আধিকারিকরা ধরেই নিলেন তার মৃত্যু হয়েছে? যদিও এনিয়ে প্রশ্ন করা হয় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কর্মী আধিকারিকদের কয়েক জনকে। তাঁরা কেউ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। পূর্ব রেলের মূখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। কীভাবে ঘটনা ঘটল তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” ছোড়া পুলিশ ফাঁড়ির আইসি রণজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এদিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ রেলের তরফ থেকে আমাদের কাছে খবর আসে রেলের এক কর্মীর দেহ অজয় নদের চরে পড়ে রয়েছে। তারপর দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: জ্বরে মৃত্যু বৃদ্ধের, করোনা পরীক্ষা না করানো পর্যন্ত দেহ সৎকার করতে দিলেন না গ্রামবাসীরা]
The post চলন্ত ট্রেন থেকে নদীতে পড়লেন গার্ড, চরে মুখ গুঁজে পড়ে কয়েক ঘণ্টা, উদ্ধারে এল না কেউ appeared first on Sangbad Pratidin.