সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল গুজরাট। সেরাজ্যের সরকারের দায়ের করা পিটিশন খারিজ হয়ে গেল শীর্ষ আদালতে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিলকিসের ধর্ষকদের জামিন খারিজ করে জেলে ফিরতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি গুজরাট সরকারকেও তীব্র ভর্ৎসনা করে শীর্ষ আদালত। তার পরেই সুপ্রিম কোর্টে ফের পিটিশন দায়ের করে গুজরাট সরকার। সেখানে বলা হয়, বিলকিস মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ‘খারাপ’ মন্তব্য করা হয়েছে। এদিন খারিজ হয়ে গিয়েছে গুজরাট সরকারের সেই পিটিশন।
বুধবার এই পিটিশন পেশ করা হয় সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি বি ভি নাগরত্ন এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চে। কিন্তু গুজরাট সরকারের আবেদন প্রথমেই খারিজ করে দেন দুই বিচারপতি। বেঞ্চের তরফে বলা হয়, "রিভিউ পিটিশন খুব ভালোভাবে খতিয়ে দেখা হয়েছে। সবশেষে এটা বলা যায়, সুপ্রিম নির্দেশে কোনও ত্রুটি ছিল না, তাই নতুন করে বিবেচনার প্রয়োজন নেই। এই রিভিউ পিটিশনের কোনও ভিত্তি নেই বলেই এটি খারিজ করা হল।"
প্রসঙ্গত, বিলকিস বানোকে ধর্ষণের অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১১ জনকে। তার পর ২০১৯ সালে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় বিলকিসের ধর্ষকদের একজন। রাধেশ্যাম ভগবানদাস শাহের আবেদন ছিল, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যেন তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। শীর্ষ আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যে গুজরাট সরকার চাইলে মুক্তি দিতে পারে বিলকিসের ধর্ষকদের। সেই রায়ের ভিত্তিতেই ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট মুক্তি পায় ১১ ধর্ষক।
গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তে তুমুল প্রতিবাদ শুরু হয় দেশজুড়ে। নিজের রায় খতিয়ে দেখুক সুপ্রিম কোর্ট, এই মর্মে আবেদন করা হয়। শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া সংক্রান্ত নির্দেশের অপব্যবহার হয়েছে। নিজের রায় খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট। সাফ জানিয়ে দেয়, ১৪ দিনের মধ্যেই ফের জেলে ফিরে আসতে হবে ১১ জন অপরাধীকে। পাশাপাশি মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে গুজরাট সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে শীর্ষ আদালত। বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপব্যবহার করেছে গুজরাট। সুপ্রিম কোর্টের রায় থেকে গুজরাট সংক্রান্ত নেতিবাচক মন্তব্য যেন সরিয়ে নেওয়া হয়, নতুন করে সেই আবেদন করে সেরাজ্যের সরকার। এবার সেই আবেদনও খারিজ হল শীর্ষ আদালতে।