সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ষণের অপরাধে তিনি তাঁর সাজা হয়েছে ঠিকই, তবে লাগাতার ছুটিতে জেলের বাইরেই বেশি সময় কাটছে রাম রহিমের। হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের এক একবার প্যারোলের আর্জি মঞ্জুর হল ডেরা সচ্চা সৌদার প্রধানের। তবে ছুটি মিললেও এবার নির্বাচন কমিশনের তরফে একাধিক শর্ত চাপানো হয়েছে তাঁর উপর।
হরিয়ানায় বিধানসভা ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় এবার ছুটির জন্য কমিশনের অনুমতির প্রয়োজন ছিল রাম রহিমের। সেই মতো কমিশনের কাছে তাঁর ছুটির আবেদন পাঠায় সরকার। সেই অনুমতি মিললেও ছুটির শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে, যে ২০ দিন তিনি ছুটিতে থাকবেন সেই দিনগুলিতে হরিয়ানায় যেতে পারবেন না তিনি। করতে পারবেন না ভোটের প্রচার। এমনকি সোশাল মিডিয়াতেও এই বিষয়ে কোনও পোস্ট করা যাবে না। যদিও ধর্ষক রাম রহিমের এমন বার বার ছুটির ঘটনায় প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধী শিবির।
উল্লেখ্য, ডেরার দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০১৭ সালে রাম রহিমকে কুড়ি বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল হরিয়ানার পঞ্চকুলা আদালত। এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আনার জন্য খুন হতে হয় এক সাংবাদিককে। সেই ঘটনায় আরও তিনজনের সঙ্গে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন রাম রহিম। তবে ২০২০ সালে জেলে যাওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ১৫ বার তাঁকে প্যারলে মুক্তি দিয়েছে হরিয়ানার বিজেপি সরকার। যার ফলে ২৫৯ দিন জেলের বাইরে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। মূলত পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে বিপুল সংখ্যক অনুগামী রয়েছে রাম রহিমের। গত বছর নভেম্বরে রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ছুটি দেওয়া হয় তাঁকে। হরিয়ানায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও ৫০ দিনের ছুটি পান তিনি। এমনকী পাঞ্জাব বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনের আগেও নানা ‘অজুহাতে’ প্যারোল মঞ্জুর হয়েছে তাঁর।
বার বার এই ছুটি প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের দাবি, উত্তর ও পশ্চিম ভারতে এক কোটির বেশি অনুগামী রয়েছে রাম রহিমের। যাঁদের বেশিরভাগই দলিত ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণি। ফলে ডেরার আশীর্বাদ কোনও নেতার উপর পড়লে ভোটের নদীতে তাঁর বৈতরণী পারের তুমুল সম্ভাবনা। রাজনৈতিক মহলের মতে, রাম রহিমের ভক্তদের খুশি করতেই এই সিদ্ধান্ত। তিনি প্রচার না করলেও ভক্তরা তাঁর সাক্ষাৎ পেলেও ভোটের বাক্সে প্রতিফলন পড়বে।