সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল দেশ: ‘কেউ কথা রাখেনি… কেউ কথা রাখে না।’ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই বিখ্যাত পংক্তিই যেন আজ ধ্বনিত উদ্ধব ঠাকরের গলায়। এদিন বিজেপির ‘চাণক্য’ তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন বালাসাহেব ঠাকরের উত্তরসূরী। সদ্য মুখ্যমন্ত্রীর পদ খোয়ানো উদ্ধব বলেন, “অমিত শাহ যদি কথা রাখতেন তাহলে আজ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতেন কোনও বিজেপি নেতা।”
বুধবার সেনা বিধায়কদের বিদ্রোহের মুখে ফেসবুক লাইভে পদে ইস্তফা দেন উদ্ধব (Uddhav Thackeray)। গতকাল, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথগ্রহণ করেন শিব সেনার ‘বিদ্রোহী’ নেতা একনাথ শিণ্ডে। তারপর এই প্রথম সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দেন উদ্ধব। তিনি বলেন, “যদি অমিত শাহ আমাকে দেওয়া কথা রাখতেন, তাহলে আজ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে কোনও বিজেপি নেতা থাকতেন।” উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের মহারাষ্ট্র বিধনসভা নির্বাচনে জয়লাভ করে বিজেপি-শিব সেনা জোট। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে বিবাদের জেরে প্রায় ৩০ বছরের জোট ভেঙে যায়। মারাঠা ‘স্ট্র্ং ম্যান’ শরদ পওয়ারের নেতৃত্বে কংগ্রেস, এনসিপি-কে সঙ্গে নিয়ে ‘মহা বিকাশ আগাড়ি’ জোট সরকার গঠন করেন উদ্ধব।
[আরও পড়ুন: জ্বালা ধরাচ্ছে জ্বালানি, এবার পেট্রল-ডিজেল রপ্তানিতে কর চাপাল কেন্দ্র]
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ১৯ -এর বিধানসভা নির্বাচনের পর উদ্ধব দাবি করেছিলেন যে নির্বাচনের আগেই মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে। শর্ত মাফিক, প্রথম ভাগ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদ থাকবে বিজেপির হাতে। পরের অংশে শাসন করবে শিব সেনা। এই সমঝোতায় নাকি সিলমোহর দিয়েছিলেন খোদ অমিত শাহ। যদিও এই দাবি বরাবরই নাকচ করে এসেছে বিজেপি। আজ ফের সেই প্রসঙ্গ তুলেই প্রাক্তন জোটসঙ্গীর বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেন উদ্ধব।
এদিকে, মহারাষ্ট্রের শাসনভার একনাথ শিণ্ডের হাতে তুলে দেওয়ায় প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। প্রশ্ন উঠছে, যদি বাইরের কাউকেই মুখ্যমন্ত্রী বানানোর পরিকল্পনা ছিল, তাহলে শিব সেনার দাবি আগেই কেন মেনে নেয়নি বিজেপি। অনেকেই মনে করছেন, কংগ্রেস ও এনসিপিকে চাপে ফেলতে এবং উদ্ধব ঠাকরেকে শিক্ষা দিতেই দেবেন্দ্র ফড়ণবিসের বদলে একনাথকে মুখমন্ত্রীর পদ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে যে কোনও মূল্যে মহারাষ্ট্র দখলে মরিয়া গেরুয়া শিবির।