সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের চর্চায় কেরলের অখিলা ওরফে হাদিয়া। ২০১৬ সালে মুসলিম ধর্মাবলম্বী যুবককে বিয়ে করে খবরে এসেছিলেন তিনি। ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে অখিলা হয়েছিলেন হাদিয়া। এদিকে লাভ জেহাদের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর বাবা অশোকান। তার পর অনেক জল গড়িয়েছে। বর্তমানে হাদিয়ার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে ফের আদালতে দ্বারস্থ হন হাদিয়ার বাবা। যদিও ভিডিও বার্তায় বাবার সেই অভিযোগ নস্যাৎ করে মেয়ে জানিয়েছেন, ‘ভালোই আছি। পুরনো সম্পর্ক ছেড়ে নতুন জীবনে পা রেখেছি।’ নতুন সম্পর্কের বিষয় তাঁর পরিবারও জানে বলে দাবি করেছেন হাদিয়া। বাবার আদালতে দ্বারস্থ হওয়ার খবরে হতবাক মেয়ে। তবে হাদিয়া বর্তমানে কোথায় রয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
শনিবার প্রকাশ্যে আসা ভিডিও বার্তায় হাদিয়া বলেন, জাহানের সঙ্গে সম্পর্কটা চালিয়ে যেতে পারছি না বুঝতে পেরে বিয়ে থেকে বেরিয়ে এসেছি। বর্তমানে আমি আমার পছন্দের অন্য একজনকে বিয়ে করেছি। আমি ভালো আছি। মুসলিম হিসেবেই জীবন কাটাচ্ছি। তিনি আরও জানিয়েছেন, আমার মা-বাবাও আমার পুনর্বিবাহ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। এর পরই তাঁর সংযোজন, “সংবিধান সকলকে বিয়ের অধিকার দিয়েছে। আবার বিয়ে থেকে বেরিয়ে আসারও অধিকার দিয়েছে। সমাজে এটা খুব সাধারণ ব্য়াপার। কিন্তু আমার বিয়ে নিয়ে সমাজ এতো বিরক্ত কেন কে জানে! আমি নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো যথেষ্ট উপযুক্ত।” তবে বর্তমান স্বামীর বিষয় বিস্তারিত তথ্য দিতে চাননি হাদিয়া।
[আরও পড়ুন: চাকায় আর কাঁটা নয়, বেআইনি পার্কিং ঠেকাতে পুরসভার হাতিয়ার নতুন অ্যাপ]
উল্লেখ্য, হাদিয়ার বাবার অশোকানের অভিযোগ ছিল, মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হলেও সে কোথায় রয়েছে তিনি জানেন না। তাই কেরল হাই কোর্টে হেবিয়াস কর্পাস দায়ের করে হাদিয়ার বাবা। অথচ তাঁর মেয়ের দাবি, নতুন জীবনের বিষয় পরিবার ওয়াকিবহাল। হাদিয়ার ভিডিও বার্তার পর অশোকানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চায়নি।
কেরলের ভাইকুম শহরের বাসিন্দা বছর চব্বিশের যুবতী হাদিয়া। জন্মসূত্রে তিনি হিন্দু। বিয়ের আগে তাঁর নাম ছিল অখিলা। কলেজে পড়াকালীন ভালবেসে শফিন জাহান নামে এক মুসলিম যুবককে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর নিজের ধর্মও পালটে ফেলেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর, ওই যুবতীর নাম হয় হাদিয়া। বিষয়টি জানতে পেরেই আদালতের দ্বারস্থ হন হাদিয়ার পরিবারের লোকেরা। তাঁর বাবা অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়ে লাভ জেহাদের শিকার। ২০১৭ সালে এনআইএ রিপোর্টের ভিত্তিতে হাদিয়া ও শফিনের বিয়ে বাতিল করে দেয় কেরল হাই কোর্ট। কেরল হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন হাদিয়ার স্বামী শফিন জাহান।
[আরও পড়ুন: শীতলতম রবিবার! ১৫ ডিগ্রির নিচে নামতে পারে কলকাতা-সহ রাজ্যের তাপমাত্রা]
মামলা চলাকালীন হাদিয়া শীর্ষ আদালতকে জানান, তাঁর উপর কোনও চাপ ছিল না। শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, কোনও প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা যদি বলেন তিনি নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেছেন, তাহলে সেই বিয়ে নিয়ে তদন্ত করতে পারে না এনআইএ। হাদিয়ার বিয়ে নিয়ে যে আদালতেরও কিছুই করার নেই, তাও মেনে নেন বিচারপতি।