চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: মাকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সাজা পেল ছেলে। মঙ্গলবার হলদিয়া মহকুমা আদালতে অতিরিক্ত দায়রা আদলতের বিচারক অঞ্জন কুমার সরকার এই রায় দিয়েছেন। খুনি সাজা পাওয়ায় খুশি পরিবারের সদস্য-সহ এলাকার বাসিন্দারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রাম (Nandigram) দুনম্বর ব্লকের শিবরামপুর গ্রামে বাসিন্দা ছিলেন খুল্লনা বর্মন (৫৫)। ছোট ছেলে শক্তিপদ বর্মন (২৮) তাঁর সঙ্গেই থাকত। বড় ছেলে শংকর বর্মন পাশেই পরিবার নিয়ে আলাদা থাকতেন। ২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি (February) রাতে শক্তিপদ মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে আসে। রেগে যান খুল্লনাদেবী। বকাবকি করেন ছেলেকে। তাতেই মেজাজ হারিয়ে রড নিয়ে মাকে কয়েকবার আঘাত করে শক্তিপদ। চিৎকার শুনে বড় ছেলে শংকর ছুটে গিয়ে দেখেন, ভাই শক্তিপদ ঘরের এক কোণে রড হাতে দাঁড়িয়ে আছে। মেঝেতে পড়ে রয়েছে খুল্লনাদেবীর রক্তাক্ত নিথর দেহ। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। গ্রেপ্তার করা হয় শক্তিপদকে।
[আরও পড়ুন: তীব্র গরম থেকে বাঁচতে ক্লাসরুমে সুইমিংপুল! স্কুলে এসে জলকেলিতে মাতল কচিকাচারা]
শংকরবাবুর করা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে রেখে শুরু হয় বিচারপ্রক্রিয়া। পরিবার ও স্থানীয়দের মিলিয়ে মোট ১৩ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সব প্রমাণ খতিয়ে দেখে মঙ্গলবার বিচারক অঞ্জনকুমার সরকার অভিযুক্ত যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আনাদায়ে আরও ৬ মাস জেল হেফাজতের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক।
আদালতের রায়ে খুশি মৃতের বড় ছেলে শংকর বর্মন। তিনি বলেন, "ভাই মাকে খুন করেছে। এমন ভাইয়ের মুখ দেখতে চাই না। আমি ওর মৃত্যু কামনা করেছিলাম। কিন্তু আইনি ব্যাপার। আদালত যা বিচার দিয়েছে সেটাই মেনে নিচ্ছি। আমরা খুশি।" এই মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী দিলীপ কুমার শী জানিয়েছেন, "অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে তাঁর মাকে খুন করবার যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ উঠে এসেছে। তারই ভিত্তিতে রায় দিয়েছে আদালত।"