সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিনকয়েক আগেই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ইসলামি রীতি মোতাবেক বুধবার তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় রাজধানী তেহরানে। প্রয়াত রাষ্ট্রপ্রধানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন হাজার হাজার অনুরাগী। ছিলেন বিশ্বের তাবড় দেশের নেতারাও। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল হামাস, তালিবান ও হাউথি-সহ একাধিক জঙ্গি সংগঠনের পাণ্ডারা। এদের অনেকেরই নাম রয়েছে রাষ্ট্রংঘের তালিকায়। আর এদের মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ইরানের বিরুদ্ধে। ফলে 'গ্লোবাল জেহাদে' তেহরানের হাত থাকার অভিযোগ আরও জোরাল হয়েছে।
রয়টার্স সূত্রে খবর, এদিন রাইসির শোকসভায় উপস্থিত ছিল আফগানিস্তানের তালিবান শাসকদের উপপ্রধানমন্ত্রী মোল্লা বারাদার। ছিল ইজরায়েলে হামলার অন্য়তম চক্রী তথা হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়েহ। এছাড়াও দেখা যায় অন্যান্য় জঙ্গি সংগঠনের মাথাদের। সূত্রের দাবি, আল কায়দার মতো আতঙ্ক সৃষ্টিকারী জেহাদি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাও ছিল শেষকৃত্য়ে। যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রসংঘের নিষিদ্ধের তালিকায় রয়েছে। মঙ্গলবারই হামাস-ইজরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতিতে হামাসের কুখ্যাত নেতা হানিয়েহর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির দাবি উঠেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে।
[আরও পড়ুন: প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্রের মর্যাদা, এবার ইউরোপের ৩ দেশের সঙ্গে ‘ঠান্ডা লড়াই’ নেতানিয়াহুর!]
বিশ্লেষকদের মতে, রাইসির শেষকৃত্যকে কেন্দ্র করে একত্রিত হয়েছিল 'গ্লোবাল জেহাদে'র পাণ্ডারা। যারা গত কয়েক দশক ধরে গোটা বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। যার মধ্যে আল কায়দা, আইএসের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীরাও রয়েছে। নিজেদের মধ্য়ে বিরোধ থাকলেও বিশ্বজুড়ে খিলাফত (ইসলামিক শাসন) স্থাপনের লড়াই চালাচ্ছে তারা। আমেরিকা থেকে আফ্রিকায় জেহাদের আগুন জ্বালিয়ে দিতে তৎপর এই জঙ্গিরা। জেহাদিদের ফৌজে রয়েছে উজবেক, তাজিক, কিরঘিজ, পাকিস্তানি ও ইরানি জঙ্গিরা। এদিকে, গত ৮ মাস ধরে গাজায় ভয়ংকর যুদ্ধ চলছে হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে। ইরানের মদতপুষ্ট হাউথিরা হামলার ধার বজায় রেখেছে লোহিত সাগরে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার ভয়ংকর দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির। আজারবাইজানে যাওয়ার পথে দুর্গম পার্বত্য এলাকায় আছড়ে পড়ে তাঁর কপ্টার। রাইসি ছাড়াও কপ্টারে ছিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমিরাবদোল্লাহিয়ান-সহ আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক। সোমবার ইসলামিক দেশটির জাতীয় সংবাদমাধ্যম সকলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। এর পরই রাইসির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। সেই সময় শোকজ্ঞাপন করতে দেখা যায় হামাস, হেজবোল্লা, তালিবানের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতাদেরও।