shono
Advertisement

হাঁসখালি গণধর্ষণ কাণ্ড: মূল অভিযুক্তের বাবা তৃণমূল নেতাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআইয়ের

কী কী প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হল তাঁকে?
Posted: 08:33 PM Apr 26, 2022Updated: 08:33 PM Apr 26, 2022

বিপ্লব দত্ত,কৃষ্ণনগর: নদিয়ার হাঁসখালির গণধর্ষণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সোহেল গোয়ালি ওরফে ব্রজর বাবা সমরেন্দ্র গোয়ালিকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হল। কী কী প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হল জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানিয়ে দেন, যা বলার সিবিআইকে বলেছেন।

Advertisement

হাঁসখালির গণধর্ষণ কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমরেন্দ্র গোয়ালিকে সোমবার রাতে নোটিস পাঠায় সিবিআই। কৃষ্ণনগরের সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সমরেন্দ্র গোয়ালি তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে সেই ক্যাম্পে পৌঁছান। এদিন তাঁকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসাররা। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। জিজ্ঞাসাবাদের পর সমরেন্দ্রর স্ত্রী একা বেরিয়ে এসে অটোয় বাড়ি ফিরে যান। সমরেন্দ্র গোয়ালি রয়ে যান অস্থায়ী ক্যাম্পেই। শেষে বিকালে সিবিআই তাঁকে ছেড়ে দেয়।

বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সমরেন্দ্র বলেন,”যা বলার সিবিআইকে বলেছি। কিছু জানার থাকলে সিবিআইয়ের সঙ্গে কথা বলুন।” যদিও সিবিআইয়ের তরফে এ নিয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি। সমরেন্দ্র গোয়ালি গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য। গত ৯ এপ্রিল হাঁসখালি থানায় নাবালিকাকে গণধর্ষণের (Hanskhali Rape Case) অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর পুলিশ সমরেন্দ্র গোয়ালির ছেলে সোহেলকে গ্রেপ্তার করেছিল। ছেলের গ্রেপ্তারির পর সমরেন্দ্র গোয়ালি বলেছিলেন, “আমার ছেলের জন্মদিনের পার্টি ছিল ৪ এপ্রিল। বিকেল সাড়ে ৫ টার মধ্যে খাওয়া-দাওয়া হয়ে গিয়েছিল। যে মেয়েটিকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা, তাকে শ্যামনগরে রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে আসা হয়। মেয়েটি ব্রজকে বাড়ি চলে যেতে বলে। জানায় সে নিজেই চলে যাবে। এর মধ্যে কীভাবে এই ঘটনা ঘটেছে, তা আমরা কেউ জানি না। তবে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”

[আরও পড়ুন: তীব্র গরম কাড়ল আরও এক প্রাণ, হিট স্ট্রোকের বলি যাদবপুর বিদ্যাপীঠের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী]

ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তও দাবি করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, সবরকম সহযোগিতা করবেন। তাঁর কথায়, “আমার রাজনৈতিক শত্রু রয়েছে। তার জন্য কেউ আমার ছেলেকে ফাঁসাচ্ছে কি না, জানি না। আমি চাই পূর্ণাঙ্গ হোক।” দায়িত্বভার হাতে নেওয়ার পর সিবিআই অভিযুক্তদের তো বটেই, গ্রামের বেশ কয়েকজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে এই প্রথম ব্রজর বাবাকে ডেকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এদিকে সোহেল এবং আরেক অভিযুক্ত প্রভাকর পোদ্দারকে সোমবার বিকেলে রানাঘাট মহকুমা আদালতে হাজির করানোয় সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারদের বিচারকের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়। আদালত জানিয়ে দেওয়া হয়, এরপর থেকে সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে আসামিকে হাজির করতে হবে। সোয়েল এবং প্রভাকর চারদিনের জেল হেফাজতে রয়েছে। নতুন করে গ্রেপ্তার হওয়া আকাশ বাড়োই, দীপ্ত গোয়ালি ও সুরজিৎ রায়কে এখনও আদালতে হাজির করানো হয়নি।

অন্যদিকে সিবিআই সূত্রে খবর, হাঁসখালির ধর্ষণকাণ্ডের ঘটনায় সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসাররা রানাঘাট মহকুমা আদালতে কর্মরত দু’জন আইনজীবীর ভূমিকা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করেছে। গত ৫ এপ্রিল ভোরে নির্যাতিতার মৃত্যুর পর ওই দুই আইনজীবীর ফোনে ব্রজর ফোন থেকে কয়েকবার ফোন করা হয়েছিল। ব্রজর মোবাইলের কললিস্ট ঘেঁটে ৫ এপ্রিল ভোরে দুটি নম্বরে একাধিকবার ফোন করার প্রমাণ মিলেছে। ওই দুটি নম্বর কার? সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে ব্রজ জানিয়েছে, নাবালিকার মৃত্যুর পর প্রমাণ লোপাটের জন্য কী কী করণীয়, আইনজীবীদের কাছ থেকে সেই পরামর্শ চেয়ে সে কয়েকবার ফোন করেছিল। সেক্ষেত্রে সাক্ষ্য প্রমাণ লোপাটের জন্য নাবালিকার মৃতদেহ তড়িঘড়ি দাহ করার পরামর্শ তাঁরাই দিয়েছিলেন কি না, তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।

[আরও পড়ুন: ‘এশিয়ার দিকেও নজর দিন’, ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে পশ্চিমী দেশগুলিকে কড়া বার্তা জয়শংকরের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement