সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশে গর্ভপাতের অনুমতি থাকলেও তাতে রয়েছে কিছু বিধিনিষেধ। তবে সেই নিয়মের 'নাগপাশে' ধর্ষকের সন্তানের জন্ম দিতে বাধ্য করা যাবে না নির্যাতিতাকে, স্পষ্ট ভাষায় এমনটাই জানিয়ে দিল কেরল হাই কোর্ট (Kerala High Court)।
এক মামলার শুনানিতে কেরল হাই কোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, 'সংবিধানের ৩(২) ধারায় স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, ধর্ষণের জেরে কেউ গর্ভবতী হলে সেই মহিলা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। ফলে ধর্ষকের সন্তানের জন্ম দিতে কোনওভাবেই নির্যাতিতাকে বাধ্য করা যায় না। ধর্ষিতাকে গর্ভপাতের অনুমতি না দেওয়ার অর্থ তাঁর উপর জোর করে মাতৃত্বের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া। সম্মানের সঙ্গে তাঁর বেঁচে থাকার অধিকারকে নষ্ট করা। এটা মহিলার মানসিক স্বাস্থ্যের উপর চরম আঘাত করা হয়।'
[আরও পড়ুন: পরিচারকের বাড়ি থেকে উদ্ধার ৩২ কোটি, অবশেষে গ্রেপ্তার ঝাড়খণ্ডের মন্ত্রীর সচিব]
ধর্ষণের শিকার ১৬ বছর বয়সি এক নাবালিকা তার মায়ের মাধ্যমে আদালতে গর্ভপাতের আবেদন জানিয়েছিলেন। অভিযোগ, নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার ১৯ বছর বয়সি 'প্রেমিকে'র দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় সে। তবে সংবিধান অনুযায়ী, গর্ভপাতের সর্বোচ্চ সীমা ২৪ সপ্তাহ (কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রয়েছে)। অথচ নাবালিকা যখন আদালতের দ্বারস্থ হয় তখন সে ২৮ সপ্তাহের গর্ভবতী। এই মামলাতে আদালত জানায়, সংবিধান মহিলাকে প্রজননের যে অধিকার দিয়েছে সেখানে মহিলা কখন সন্তান ধারন করবেন, কত সন্তান ধারন করবেন তা তিনি স্বেচ্ছায় বেছে নিতে পারেন।
[আরও পড়ুন: বিক্ষুব্ধ কাঁটাই বঙ্গ বিজেপির মূল সমস্যা, মানলেন সুকান্ত]
এই মামলার সুনানিতেই উচ্চ আদালতের তরফে তাকে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি জানানো হয়েছে, 'বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, বিবাহের পূর্বে গর্ভাবস্থা ক্ষতিকারক। বিশেষ করে যৌন নির্যাতনের জেরে গর্ভাবস্থা মানসিক আঘাতের সবচেয়ে বড় কারণ। এর ফলে গর্ভবতী মহিলার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাবিত করে। একজন মহিলার যৌন হয়রানি তাঁর কাছে শারীরিকভাবে তো বটেই মানসিকভাবেও অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তার উপর এই ঘটনার জেরে গর্ভাবস্থায় তাঁর মানসিক আঘাতকে চরম পর্যায়ে নিয়ে যায়। কারণ এটি স্বেচ্ছায় বা সচেতন অবস্থার গর্ভধারণ নয়।'