সুব্রত বিশ্বাস: প্রেমিকার বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়ে যুবকের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় রণক্ষেত্র হরিদেবপুর। নিহত যুবকের প্রেমিকার বাড়ি ভাঙচুর স্থানীয়দের। বাড়ির মূল দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়েন এলাকাবাসীরা। কার্যত তছনছ করে দেওয়া হয় প্রেমিকার বাড়ি। তাণ্ডব চলে প্রেমিকার প্রতিবেশীর বাড়িতেও। এদিকে, এই ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করল পুলিশ। প্রেমিকা, তার বাবা, মা ও ভাইকে থানায় আটক করে জেরা করছেন তদন্তকারীরা।
দশমীর রাত বারোটা নাগাদ প্রেমিকার ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরোন হরিদেবপুরের অয়ন মণ্ডল। যুবকের মায়ের দাবি, রাতভর ছেলের কোনও খোঁজ পাননি তাঁরা। পরদিন সকালে অয়নের প্রেমিকা বাড়িতে আসেন। তিনিও অয়নের কোনও খোঁজ জানেন না বলেই জানান। ততক্ষণে মগরাহাটের পুলিশ ক্যাম্পের অদূরে একটি অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে যুবকের ময়নাতদন্তও করা হয়। এরপর বিভিন্ন থানায় ছবিও পাঠিয়ে দেয় মগরাহাট থানার পুলিশ। ততক্ষণে প্রায় দুপুর আড়াইটে। অয়নের পরিবারের লোকজন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে যান। শেষবার নেপালগঞ্জে অয়নের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করাও গিয়েছিস তবে পুলিশ টালবাহানা করে বলেই অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: শান্তিনিকেতনের পর সিউড়ি, ফের রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ শিশু, তল্লাশিতে ড্রোন ওড়াল পুলিশ]
প্রশ্ন উঠছে, নিখোঁজ ডায়েরি করার সময় কেন পুলিশ অয়নের ছবি দেখিয়ে তাঁর বাবা-মাকে শনাক্ত করাল না? স্বাভাবিকভাবেই পুলিশি উদাসীনতার অভিযোগে সরব অয়নের পরিবার ও প্রতিবেশীরা। সন্ধেয় থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরে যদিও পুলিশি আশ্বাস থানা ঘেরাও প্রত্যাহার করেন বিক্ষোভকারীরা।
এরপর প্রেমিকার বাড়ির সামনে জড়ো হয় ক্ষিপ্ত জনতা। অয়নের প্রেমিকা এবং তাঁর প্রতিবেশীর বাড়ির সামনে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। কেউ দরজা ভেঙে আবার কেউ কার্নিশে উঠে বাড়িতে ঢুকে পড়ে। চলে ব্যাপক ভাঙচুর। দুমড়ে মুচড়ে দেওয়া হয় পাখা। কার্যত তছনছ করে দেওয়া হয় শোওয়ার ঘর, রান্নাঘর, বাথরুম। প্রেমিকার প্রতিবেশীর বাড়িতেও চলে তাণ্ডব। তিনি খবর দেন পুলিশে। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, পুলিশ অশান্তি থামানোর সেভাবে চেষ্টা করেনি। এদিকে, এই ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ।