সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাথরাসে ধর্মগুরু ভোলে বাবার ডেরায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শতাধিক মানুষের মৃত্যুর পর প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। উত্তরপ্রদেশ তো বটেই এই 'বাবা'র ব্যাপক প্রতিপত্তি ছিল আশেপাশের আরও একাধিক রাজ্যে। ভক্ত তালিকায় ভিভিআইপির সংখ্যাও নেহাত কম নয়। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব ছিলেন এই ধর্মগুরুর অনুরাগী। মঙ্গলবার সৎসঙ্গে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর প্রকাশ্যে এল বাবার বাণী শুনতে সৎসঙ্গে আসা অখিলেশের ছবি।
দুর্ঘটনার পর সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে অখিলেশের পুরানো একটি এক্স বার্তা ও ছবি। যেখানে দেখা যাচ্ছে ওই ধর্মগুরুর বাণী শুনতে তাঁর সৎসঙ্গে উপস্থিত হয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। যেখানে খালি পায়ে মঞ্চের নিচে দাঁড়িয়ে মাইক হাতে 'বাবা'র ভক্তদের উদ্দেশে বার্তা দিচ্ছেন তিনি। নিজের ভাষণের আগে ওই ধর্মগুরুর গুণগান করে এক বার্তা পাঠ করেন অখিলেশ। এর পর ভোলে বাবা ও তাঁর ভক্তদের প্রশংসা করে দীর্ঘ বার্তা দেন তিনি। যে ছবি ভাইরাল হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে অখিলেশ যাদব(Akhilesh Yadav) সৎসঙ্গের ভিআইপি জোনে বসে 'বাবা'র বাণী শুনছেন। তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে রয়েছে তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা। অখিলেশ এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে সর্বদা বাবা নারায়ণ সাকার হরির জয়জয়কার হোক।'
[আরও পড়ুন: গুরুর পায়ের ধুলো নেওয়ার তাড়াতেই দুর্ঘটনা হাথরাসে! মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২১]
এদিকে গতকালের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২১-এ পৌঁছেছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই দায়ের হয়েছে এফআইআর। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেখানে স্বঘোষিত ধর্মগুরু সুরজ পাল ওরফে ভোলে বাবা ওরফে নারায়ণ সাকার হরির নাম নেই! রয়েছে তাঁর ‘মুখ্য সর্দার’ অর্থাৎ ঘনিষ্ঠ সহকারীর নাম। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, আয়োজকরা সৎসঙ্গের প্রকৃত দর্শকসংখ্যা লুকিয়েছিলেন অনুমতি নেওয়ার সময়।
স্থানীয় প্রশাসন ৮০ হাজার জনের জমায়েতে অনুমোদন দিলেও জানা যাচ্ছে, উপস্থিত ছিলেন আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ। আরও অভিযোগ, আয়োজকরা ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্টে যেমন সহযোগিতা করেননি তেমনই পদপিষ্টের ঘটনার পরে প্রমাণ লোপের চেষ্টাও করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, অনুষ্ঠান শেষ হলে একদল বেরিয়ে যেতে চান। বাকি দলটা উলটো স্রোতে হেঁটে এগিয়ে যান বাবার পায়ের ধুলো নিতে। এতেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আর তাতেই ঘটে যায় বিপত্তি। এই ঘটনায় মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছে সরকার। এদিকে ধর্মগুরু ভোলেবাবার কোনও সন্ধান মেলেনি বলেই জানাচ্ছে পুলিশ।