সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: ওয়াকফ সংশোধনী বিলে সাক্ষর করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। তাঁর সাক্ষরের সঙ্গে সঙ্গেই আইনে পরিণত হল বিলটি। বিরোধীদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও গত বৃহস্পতিবার লোকসভা ও শুক্রবার রাজ্যসভায় পাশ হয় ওয়াকফ সংশোধনী বিল। এর পর নিয়ম অনুযায়ী বিলটি পাঠানো হয়েছিল রাষ্ট্রপতিভবনে। শনিবার এই বিলে সাক্ষর করলেন রাষ্ট্রপতি। ফলে মাত্র তিন দিনেই আইনে পরিণত হল মোদি সরকারের আনা ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫।
গত ২ এপ্রিল লোকসভায় পেশ করা হয়েছিল ওয়াকফ সংশোধনী বিল। যেখানে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে বিতর্ক। এরপর ভোটাভুটিতে ২৮৮ ভোটে পাশ হয়ে যায় বিলটি। বিপক্ষে ভোট পড়ে ২৩২টি। রাজ্যসভাতেও ১৩ ঘণ্টা ধরে বিতর্ক চলার পর বিলের পক্ষে ভোট দেন ১২৮ জন, বিপক্ষে ভোট পড়ে ৯৫টি। উভয় কক্ষে পাশ হওয়ার পর তা পাঠানো হয়েছিল রাষ্ট্রপতির কাছে। দ্রৌপদী মুর্মুও শনিবার অনুমোদন দিয়ে দিলেন বিলে। ফলে পদ্ধতি মেনে আইনে পরিণত হল বিলটি। এবার সরকারি ভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেই কার্যকর হয়ে যাবে এই আইন।
তবে বিল আইনে পরিণত হলেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না। বিজেপির দাবি, এই বিল আইনে পরিণত হলে কোটি কোটি প্রান্তিক মুসলিম সমাজ উপকৃত হবেন। এতদিন ধরে গুটিকয়েক প্রভাবশালীর হাতে কুক্ষিগত ওয়াকফ সম্পত্তি মুক্ত হবে এবং সাধারণ মুসলিমরা উপকৃত হবেন। যদিও বিরোধীদের দাবি, এই বিল পুরোপুরি অসাংবিধানিক। এটা আসলে পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ। ইতিমধ্যেই এই আইনকে আটকাতে শীর্ষ আদালতে দায়ের হয়েছে মামলা।
আদালতে দায়ের মামলায় দাবি করা হয়েছে, বিলটি সংবিধানের ১৪, ২৪, ২৬, ২৯ এবং ৩০০এ ধারা লঙ্ঘন করছে। যে যে ধারা উল্লেখ করা হয়েছে তা হল, সমানাধিকার, ধর্মাচারণের অধিকার, ধর্মীয় বিষয় পরিচালনার স্বাধীনতা, সংখ্যালঘু অধিকার এবং সম্পত্তির অধিকার। বিলে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে দাবি করা হয়েছে, এই বিলে সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিল এবং স্টেট ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের রাখার কথা বলা হয়েছে। যা নিয়েও আপত্তি তোলা হয়েছে।