নিজস্ব সংবাদদাতা, লালবাগ: বন্ধ হাজারদুয়ারির (Hazarduari) বিনিপয়সায় দুয়ার। এবার থেকে হাজারদুয়ারি চত্বরে ঢুকতে গেলেই ফেলতে হবে কড়কড়ে ২০ টাকা। ইচ্ছা করুক বা না করুক, কাটতে হবে মিউজিয়ামে ঢোকার টিকিট। এই ফরমান জারি হতেই ক্ষোভ জমেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। অসন্তুষ্ট পর্যটকরাও।
এতদিন হাজারদুয়ারির গেট দিয়ে ঢুকতে কোনও টিকিট লাগত না। বাইরে থেকে হাজারদুয়ারির সামনের মাঠে ঘুরতে পারতেন, ছবি তুলতে পারতেন, আড্ডাও মারতে পারতেন। মিউজিয়ামে প্রবেশ করতে হলে তবেই টিকিট কাটতে হত। কিন্তু এবার অবাধ প্রবেশে রাশ টানল হাজারদুয়ারি কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে মিউজিয়ামের (Hazarduari Museum) টিকিট কাটলে তবেই প্রবেশ করা যাবে মিউজিয়াম চত্বরে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, হাজারদুয়ারির ঘেরা খোলা ময়দান দিয়েই প্রবেশ করতে হয় ইমামবাড়াতে। কেননা ইমামবাড়াতে অনেকে উপাসনা করতে যান। তাঁদের মিউজিয়ামের টিকিট কেটে তবেই ইমামবাড়াতে প্রবেশাধিকার মিলবে। অবশ্য হাজারদুয়ারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উপাসনা করতে যাঁরা প্রবেশ করবেন তাঁদের বিষয়টি ভিন্ন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, উপাসনায় কারা প্রবেশ করছেন, কারা ময়দানে ভ্রমণের জন্য প্রবেশ করছেন তা বিচার করবেন কে?
[আরও পড়ুন: রাতের আকাশে টেলিস্কোপে চোখ রেখে ইচ্ছেমত দেখুন তারার খেলা! এবার নয়া আকর্ষণ লাদাখে]
এই নয়া নিয়মে ঐতিহাসিক হাজারদুয়ারি চত্বরে অকারণে অশান্তি সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দা দিলাবার হোসেন, মনু শেখরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘হাজারদুয়ারি চত্বরে জটিলতা সৃষ্টি করতেই এই ফরমান জারি করা হয়েছে।’’ অবশ্য বৃহস্পতি ও শুক্রবার নতুন নিয়মে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই ফরমানের ফলে হাজারদুয়ারি সম্পর্কে পর্যটকদের উৎসাহ কমবে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে।
এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা অরুণ সাহা, দীপক সরকার বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ করেছি অনেক পর্যটক ময়দানে বসে হাজারদুয়ারির শোভা উপভোগ করেন। টিকিট কেটে তাঁরা আর ময়দানে প্রবেশ করবেন বলে মনে হয় না। তাছাড়া যাঁরা ময়দানে ঘুরে ঘুরে ফেরি করতেন তাঁদের জীবিকাতেও টান পড়বে।’’
এই নিয়মের বিরোধিতা করে আগামী দিনে আন্দোলন গড়ে তোলার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে বেশ কয়েকটি সংগঠন। এই ব্যাপারে সুপারিন্টেনডেন্ট আরকিওলজিস্ট (রায়গঞ্জ চক্র) হরি ওম সারন বলেন, ‘‘হাজারদুয়ারি চত্বরে অসাধু লোকের আনাগোনা শুরু হয়েছিল, তা আটকাতেই এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।’’