সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ফিরলেন তরুণ ক্রিকেটার তিলক বর্মা। বছর তিন আগে এক বিরল রোগের কবলে পড়ে খেলার মাঠ থেকে সাময়িক বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এই রোগে একে একে বিকল হয়ে পড়ছিল তার শরীরের সমস্ত পেশি। এমনকী হাতের আঙুলও ঠিকমতো নড়াচড়া করতে পারছিলেন না। সম্প্রতি সুস্থ হয়ে ফিরে এসে রোগটি সম্পর্কে সকলকে সচেতন করলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
রোগটির নাম র্যাবডোমায়োলাইসিস। এটি মাংসপেশির মারাত্মক ক্ষতি করে। এমনকি কিডনি বিকল করে দিতে পারে। ২২ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় জানান, তিনি এই রোগ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। ২০২২ সালে বাংলাদেশের 'এ' সিরিজ চলাকালীন তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর চোখ থেকে হঠাৎ জল বেরোতে শুরু করে। শরীর অবশ হয়ে যায়। হাতের আঙুলগুলো কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তাঁর মনে হচ্ছিল শরীর শক্ত পাথরের মতো হয়ে যাচ্ছে।
কী এই র্যাবডোমায়োলাইসিস?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, র্যাবডোমায়োলাইসিস একটি মারাত্মক পেশি-রোগ। অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম বা বড় কোনও আঘাত থেকে এটি হতে পারে। এই অবস্থায় মাংসপেশির টিস্যু নষ্ট হয়ে যায়। তখন পেশির বিষাক্ত উপাদান রক্তে মিশতে থাকে। পেশি থেকে ক্রিয়েটাইন কাইনেজ (CK) এবং অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ রক্তে মেশে। কিডনি সাধারণত এই বর্জ্য ফিল্টার করে বের করে দেয়। কিন্তু এই বিষাক্ত পদার্থের পরিমাণ খুব বেশি হলে কিডনির ওপর চাপ বাড়তে থাকে। তখন কিডনি সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। এমন অবস্থায় কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যুও ঘটতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞের।
রোগের প্রধান লক্ষণ
(১) মাংসপেশির দুর্বলতা বা তীব্র ব্যথা।
(২) পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া।
(৩) প্রস্রাবের রঙের পরিবর্তন হওয়া (গাঢ় বা কালচে হয়ে যাওয়া)।
(৪) পেশি ফুলে যাওয়া।
অনুশীলনের পর কয়েক দিন ধরে যদি তীব্র পেশির ব্যথা বা দুর্বলতা থাকে, তবে তা অবহেলা করা উচিত নয়। এটি র্যাবডোমায়োলাইসিসের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। এক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার।
