সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে অল্প বয়স্কদের মধ্যে ক্যানসারের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এমনটাই জানা গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, কম বয়েসি ছেলেমেয়েরা রোগের তৃতীয় বা চতুর্থ স্টেজে এসে ধরা পড়ছে। 'ক্যানসার মুক্ত ভারত'-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতে মোট ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে ২০ শতাংশের বয়স ৪০ বছরের নিচে। এর মধ্যে প্রায় ৬৩ শতাংশ রোগীর রোগ নির্ণয় হয়েছে দেরিতে।
দেরিতে রোগ নির্ণয়ের কারণ
সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি ভুল ধারণা আছে যে ক্যানসার বয়স্কদের রোগ। তাই অল্প বয়সীদের মধ্যে ক্যানসারের উপসর্গ দেখা গেলেও তা প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়। ক্রমাগত ওজন হ্রাস, মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন, কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন বা মুখের ঘা-কে সাধারণ সমস্যা হিসেবে ধরে নিয়ে অনেকেই প্রাথমিক পর্যায়ে অবহেলা করেন। বর্তমান ক্যানসার স্ক্রিনিং পদ্ধতিগুলি বয়স্কদের জন্য তৈরি, ফলে তরুণদের মধ্যে রোগ নির্ণয় কঠিন হয়। যেমন, ম্যামোগ্রাফি ৪০-এর নিচে মহিলাদের স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে কার্যকর নয়। কারণ, কম বয়সি মহিলাদের স্তনের টিস্যু অনেক বেশি ঘন হয়। এই ঘন স্তন টিস্যুর কারণেই ম্যামোগ্রাফি সঠিক রিপোর্ট দিতে পারে না।
দূষণ ও জীবনযাত্রার ভূমিকা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশগত প্রভাব বা এনভায়রনমেন্টাল এক্সপোজার এই রোগের দ্রুত বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ। এই ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে। যে বিষয়গুলি তরুণদের মধ্যে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে, তা হল-
১) শিল্প ও যানবাহনের জন্য তৈরি বায়ু দূষণ।
২) খাদ্য ও জলের মাধ্যমে শরীরে ক্ষতিকারক রাসায়নিকের উপস্থিতি।
৩) প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনিযুক্ত পানীয়, স্থূলতা এবং মানসিক চাপ।
যে লক্ষণগুলি ভুলেও উপেক্ষা করবেন না
১) স্তন, ঘাড়, পেট বা কুঁচকিতে ব্যথাহীন ছোট মাংস পিণ্ড।
২) অকারণ ওজন হ্রাস বা কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন।
৩) দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, কাশি বা ক্লান্তি।
ডাক্তাররা মনে করেন, দূষণ সরাসরি ক্যানসার সৃষ্টি না করলেও এই পদার্থগুলি কোষের মিউটেশনকে দ্রুত বাড়িয়ে তোলে। অল্পবয়সীদের মধ্যে ক্যানসার অপেক্ষাকৃত বেশি আক্রমণাত্মক হয়। চিকিৎসকরা মনে করছেন, আগামী দশকে লিকুইড বায়োপসি-এর মতো নতুন রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যানসার ডিএনএ শনাক্ত করা সহজ হবে, যা দ্রুত রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করবে।
