সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ। কলকাতা সহ অন্যান্য জেলার তাপমাত্রা ক্রমশ কমতে শুরু করেছে। শীত প্রায় দোরগোড়ায়। এই সময় থেকেই কিন্তু সাবধান হতে হবে অ্যাজমা রোগীদের। শীত ঢুকে পড়ায় বাড়তে পারে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, এমনকী হাঁপানির টান।
গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ ২০১৯-এ একটি তথ্য প্রকাশ করে। সেই তথ্য অনুসারে, এই মুহূর্তে প্রায় ৩৪০ লাখ ভারতীয় অ্যাজমায় আক্রান্ত। অ্যাজমা শ্বাসনালীর একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজনিত রোগ। এই রোগে শ্বাসনালী ফুলে যায়, সংকুচিত হয় এবং অতিরিক্ত শ্লেষ্মা তৈরি করে। এর ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। কাশির দমক বাড়তে থাকে। বুকে ব্যথা ও শাঁ শাঁ শব্দ হয়। এটি সাধারণত অ্যালার্জি বা পরিবেশগত কারণে শুরু হয়। রাত ও ভোরের দিকে এই সমস্যা বেড়তে থাকে।
শীতকালে অ্যাজমা বা হাঁপানির সমস্যা বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হল ঠান্ডা শুষ্ক বাতাস, ঘরের ভেতরের অ্যালার্জেন এবং ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। এই রোগের হাত থেকে বাঁচতে আগেভাগে সাবধানতা প্রয়োজন। কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
১. বাইরে বের হওয়ার সময় নাক ও মুখ স্কার্ফ বা মাস্ক দিয়ে ঢেকে রাখুন। এতে শ্বাস নেওয়ার সময় বাতাস কিছুটা গরম ও আর্দ্র হয়ে ফুসফুসে প্রবেশ করবে।
২. খুব ভোরে কিংবা রাতের দিকে যখন তাপমাত্রা কম থাকে, তখন বাইরে ব্যায়াম বা ঘোরাফেরা করা এড়িয়ে চলুন।
৩. গরম কাপড় পরুন যাতে শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকে।
৪. শীতকালে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ থাকায় ধুলো, ডাস্ট মাইট এবং ছত্রাক জমে। তাই, ঘরের মধ্যে রোদ-আলো বাতাস যাতে পর্যাপ্ত চলাচল করে, তা খেয়াল রাখবেন।
৫. হিটার ব্যবহার করলে খেয়াল রাখুন যেন বাতাস অতিরিক্ত শুষ্ক না হয়। প্রয়োজনে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন।
৭. রিলিভার ইনহেলার সব সময় সঙ্গে রাখুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করুন।
৮. চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী আপনার নিয়ন্ত্রক ওষুধ বা প্রিভেন্টিভ ইনহেলার প্রতিদিন নিয়ম মেনে নিন।
৯. চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফ্লু এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিন। কারণ শীতকালে সর্দি-কাশি বা ফ্লু অ্যাজমার আক্রমণকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
১০. সংক্রমণ এড়াতে নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। অসুস্থ মানুষের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন।
১১. শীতকালে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে উষ্ণ জল বা ক্যাফেইনমুক্ত গরম পানীয় পান করুন। এটি শ্বাসনালীর মিউকাস (শ্লেষ্মা) পাতলা রাখতে সাহায্য করে।
এই সাবধানতাগুলি মেনে চললে শীতকালে অ্যাজমার সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
