সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর যাঁরাই 'সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন'-এ ঢুকেছেন তাঁরাই চমকে গিয়েছেন। গোটা ওয়েবসাইটই গোলাপি হয়ে রয়েছে। পরে অবশ্য বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যায়। আসলে এই মাসটা স্তন ক্যানসারের সচেতনতার মাস। সেকথা মাথায় রেখেই বিশেষ উদ্যোগ 'সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল'-এর। মারণ রোগে আক্রান্ত এবং জয়ীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েই ওয়েবসাইট বদলে দেওয়া হয় গোলাপি রঙে। সকলকে স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতন করা হয়েছে ওয়েবসাইটের ব্যানারেও। আর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেন চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার। তিনি ফেসবুকে পোস্ট করে এই প্রয়াসকে 'ঐতিহাসিক' আখ্যাও দিয়েছেন।
পরে তিনি কথা বলেন 'সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল'-এর সঙ্গে। জানান স্তনের ক্যানসার সম্পর্কে। কীভাবে সচেতন হতে হবে স্তন ক্যানসারের মোকাবিলায়। এর উত্তরে ডাক্তারবাবু বলেন, ''প্রথমত, মানুষকে জানাতে হবে প্রতি আটজন মহিলার মধ্যে একজনের স্তন ক্যানসার রয়েছে। দ্বিতীয় বিষয়টা হল, যদি ক্যানসার প্রাথমিক অবস্থায় থাকে অর্থাৎ ২ সেন্টিমিটারের নিচে ক্যানসার ধরা পড়ে তাহলে তা সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। এবং সেক্ষেত্রে স্তনও বাদ দেওয়ারও প্রয়োজন পড়ে না। সচেতনতার এই গোলাপি আলো এটাই বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, স্তন ক্যানসার সম্পর্কে মহিলাদের সচেতন হতে হবে। কারণ এটাই বাস্তব যে প্রতি আটজনের মধ্যে একজনের এটা হয়। এবং এটাও সত্যি যে, প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে তা সেরে যায়।''
সেই সঙ্গেই তৃতীয় একটি বিষয়ও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ''প্রতি মাসে একবার করে নিজের স্তন পরীক্ষা করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO, কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার সকলেই এই বিষয়টি বারবার করে বলছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে উদ্যোগটি নিয়েছে এর নাম 'পিঙ্ক করিডর' বা 'গোলাপি রাস্তা'। আজ সংবাদ প্রতিদিন এই ঐতিহাসিক উদ্যোগের সঙ্গে মিলিত হল। এবং আশা করি মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হল, স্তন ক্যানসার নিরাময়যোগ্য। এবং সব সময় স্তন বাদ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।''
স্তন ক্যানসারের কি কোনও বয়স হয়? এর জবাবে তিনি জানালেন, ''যে কোনও বয়সেই এই অসুখ হতে পারে। তবে চল্লিশ বছর বয়সের পর তা বাড়ে। আশি বছরে গিয়ে সেটা আরও বেড়ে যায়। অর্থাৎ বয়স বাড়লে সম্ভাবনা আরও বাড়ে। তবে বাংলায় যে পরিসংখ্যান তাতে দেখা যায় ৪৫ থেকে ৫০ বছরেই এর সম্ভাবনা প্রবল হয়ে ওঠে।''
স্তন ক্যানসারের চিকিৎসায় কি ভারত বিশ্বের বাকি দেশগুলির সমকক্ষ? এর উত্তরে আশার কথাই শোনালেন দীপ্তেন্দ্রবাবু। তিনি জানালেন, ''এই মুহূর্তে আমেরিকায় যে চিকিৎসা হয়, কলকাতাতেও সেই ভাবেই চিকিৎসা হয়। এবং এসএসকেমে আমরা ৭২ থেকে ৭৪ শতাংশ ক্ষেত্রে স্তনকে সংরক্ষণ করতে পারি। যাঁদের স্তন বাদ দেওয়া হয় তাঁদেরও স্তন পুনর্গঠন করে দেওয়া হয় একই সিটিংয়ে। সরকারি ব্যবস্থায় ২৮টি হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে, সেখানে নিখরচায় কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। আশা, অদূর ভবিষ্যতে রোবটের সাহায্যেও এই অপারেশন করা যাবে।''
