সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেয়ারা হল গুণে ভরা একটি ফল। এটি ভিটামিন সি-এর একটি চমৎকার উৎস, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার থাকে। ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এছাড়া, পেয়ারা রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, যা হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এর মধ্যে থাকা লাইকোপেন ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতেও কার্যকরী। এমনকী দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতেও সহায়ক এই ফলটি। কিন্তু কীভাবে খেতে হয় তা কি জানেন? ঠিক কখন খেলে মিলবে সর্বাধিক পুষ্টি? পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি করে পেয়ারা খেলে একাধিক রোগের ঝুঁকি কমে।
অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষায়: পেয়ারা ফাইবারের একটি খুব ভালো উৎস। খালি পেটে এটি খেলে অন্ত্রে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া বা প্রোবায়োটিকের বৃদ্ধি ঘটে। এই ফাইবার মলের পরিমাণ বাড়ায় এবং কোলন পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত পেয়ারা সেবনে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয়, যা কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ: পেয়ারার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) খুব কম। খালি পেটে এটি খেলে শরীরে শর্করা খুব ধীরে ধীরে প্রবেশ করে। এছাড়া, এর উচ্চ ফাইবার উপাদান খাবার হজমের গতি কমিয়ে দেয়, ফলে খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা চট করে বেড়ে যায় না। পেয়েরা ডায়াবেটিস বা প্রি-ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: পেয়ারা পটাশিয়াম এবং দ্রবণীয় ফাইবারে সমৃদ্ধ। খালি পেটে খেলে শরীরের অতিরিক্ত সোডিয়াম বা লবণের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়া, এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যা হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: খালি পেটে পেয়ারা খেলে কম ক্যালোরি সত্ত্বেও পেট দীর্ঘ সময়ের জন্য ভরা থাকে। কারণ এতে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার ও জলীয় অংশ থাকে। এর ফলে ঘন ঘন খিদে পাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। পেয়ারা শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে কিন্তু ফ্যাট বাড়ায় না। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটি একটি আদর্শ ফল।
সকালে খালি পেটে কীভাবে পেয়ারা খাবেন?
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর, দাঁত মেজে এবং এক গ্লাস জল পান করার ১৫ থেকে ৩০ মিনিট পরে পেয়ারা খেতে পারেন। প্রথমে একটি মাঝারি আকারের পেয়ারা নিন। এটিকে ভালোভাবে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। খোসা ছাড়ানোর দরকার নেই, কারণ খোসাতেও প্রচুর ফাইবার ও পুষ্টি থাকে। বীজ-সহ ছোট ছোট টুকরো করে কেটে বা কামড়ে খান। পেয়ারা খাওয়ার পরে কমপক্ষে ৩০ মিনিট অন্য কোনও ভারী খাবার বা চা-কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে পেয়ারার পুষ্টিগুণ শরীর সবচেয়ে ভালোভাবে শোষণ করতে পারবে।
