সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। মাত্র ৩০ সেকেন্ডের ভয়ংকর ঘটনায় প্রাণ হারান অন্তত ২৭৪ জন। সেই মর্মান্তিক দিন বারবার ফিরে ফিরে আসছে দেশবাসীর স্মৃতিতে। বিশেষ করে এরপরই যাঁদের ফ্লাইটে যাত্রার কথা ছিল, তাঁরা রীতিমতো আতঙ্কিত। তাছাড়া আহমেদাবাদের ঘটনার পরও প্রতিনিয়ত বিমান বিভ্রাটের খবর উঠে আসছে শিরোনামে। ফলে সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রিটি, বিমানযাত্রায় নিজেদের আতঙ্কের কথা সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করে নিয়েছেন অনেকেই। বলছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেন সফর করতে হচ্ছে তাঁদের। প্রতি মুহূর্তে ভয়, উদ্বেগ! এই বুঝি কিছু অঘটন ঘটে! মানসিক চাপে ভুগছেন অনেকেই। এই চাপ দূরে রাখতেই বিশেষ পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফ্লাইটে ওঠার আগেই আমাদের মানসিক চাপ বেড়ে গিয়ে বিভিন্ন উদ্বেগ ও মানসিক অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। বিমানে ওঠার আগে এই মানসিক অস্থিরতা কমাতে আমাদের কী কী করণীয়?
প্রথমত, অহেতুক আতঙ্কিত হবেন না। মনের মধ্যে উদ্বেগ পুষে রাখবেন না। আমাদের চারপাশে অজস্র বিমান দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়েছে। সেই খবরগুলির সত্যতা যাচাই না করেই অহেতুক সেসব নিয়ে উত্তেজিত হবেন না। এই সংক্রান্ত যেকোনও ঘটনার তথ্য যাচাই করুন। অতিরিক্ত আগ্রহ পরিত্যাগ করুন। মনে রাখবেন, বিমানে ভ্রমণ পরিসংখ্যানগত ভাবে এখনও পর্যন্ত অন্যতম নিরাপদ পরিবহণ ব্যবস্থা। পাইলটদের প্রশিক্ষণ এবং সুরক্ষা প্রোটোকল সম্পর্কে অবহিত হয়ে থাকলে আপনার আত্মবিশ্বাস আরও বহুগুণ বেড়ে যাবে।
দ্বিতীয়ত, শ্বাস-প্রশ্বাস নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখুন। উদ্বেগ কমাতে বক্স ব্রিদিং অনুশীলন করুন। মানসিক অস্থিরতায় আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক গতি বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে আমাদের বক্স ব্রিদিং অভ্যাস করা প্রয়োজন।
বক্স ব্রিদিং কীভাবে করবেন?
৪ সেকেন্ড ধরে শ্বাসগ্রহণ করুন।
৪ সেকেন্ড শ্বাস ধরে রাখুন।
৬ সেকেন্ড ধরে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন।
এই কৌশলটি আপনার স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করতে সাহায্য করবে।
তৃতীয়ত, কিছু সহজ কৌশল আপনার শরীরকে দ্রুত শান্ত করতে সাহায্য করবে। যেমন-
- ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ, হাত ও ঘাড় ধুয়ে নিন।
- হাতে একটি বরফের টুকরো ধরে রাখুন।
- আপনার পা শক্তভাবে মাটিতে চেপে বসুন। বসে থাকাকালীন ধীরে ধীরে গোড়ালি উপরে তুলুন।
ফ্লাইটে ওঠার আগে এমন কিছু করুন যা আপনাকে শান্ত থাকতে সাহায্য করে। ধরুন আপনি বই পড়তে ভালোবাসেন। সেক্ষেত্রে বই পড়ুন। গান শুনতে ভালোবাসলে গান শুনুন। প্রিয় কারও সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করলে, তার সঙ্গে কথা বলুন। এভাবে নিজেকে শান্ত রেখে মানসিক স্থিরতা বজায় রাখুন। কোনও কারণে বিমানে ওঠার পর যদি খুব নার্ভাস লাগে, তবে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের জানান। এ ব্যাপারে নিশ্চয়ই তারা আপনাকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন। সর্বোপরি মানসিক শান্তি এবং নিরাপত্তার অনুভূতিকে অগ্রাধিকার দেওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অহেতুক আতঙ্কিত হবেন না। আকাশ পথে নিশ্চিন্তে যাত্রা করুন।