সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রকৃতির বুকে কত যে অপার গোপন সৌন্দর্য লুকিয়ে, তা বৃহদাংশই লোকচক্ষুর আড়ালে। আসলে প্রকৃতি কখন কোন রূপ উন্মোচন করবে, কোনটাই বা অন্তরালে রাখবে, তার হদিশ তো পাওয়া যায় না। এবার শীতের মরশুমে তেমনই এক অদেখা দৃশ্য প্রকাশ্যে এল। বরফাবৃত রুখাশুখা হিমালয়ের পাহাড়ের কোলে মাথা তুলে দাঁড়াল এক অপূর্ব সুন্দরী ফুল! সাদা-হলদে স্বচ্ছ, ত্রিভুজ আকৃতির সেই পুষ্প দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন কাঁচের চূড়া! অনেকটা প্যাগোডার মতো। সিকিম বেড়াতে গিয়ে পাহাড়ের ধাপে এই ফুল চোখে পড়েছিল দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি আনন্দ মাহিন্দ্রার। তিনিই সেসব ছবি তুলে পোস্ট করেছেন সোশাল মিডিয়ায়। প্রকাশ করেছেন মুগ্ধতা।
এহেন সুন্দরী ফুলের নাম স্থানীয় ভাষায় 'চুকা'। কেউ কেউ বলে থাকেন 'সিকিম সুন্দরী', যথার্থই বলেন! সাধারণত হিমালয় ও কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির সুউচ্চ অংশে এর জন্ম। অন্তত ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার ফুট উপরে গেলেই তবেই দেখা পাওয়া যায়। তিব্বত, মায়ানমার থেকে আফগানিস্তান, পাকিস্তান এর জন্মস্থল। উদ্ভিদবিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম রিউম নোবাইল (Rheum nobile)। সবুজ পাতার মাঝখান থেকে লম্বা হলদেটে সাদা এক ফুল, অন্তত ২ মিটার লম্বা। দেখতে অনেকটা ওলটানো শঙ্কুর (Cone) মতো। এতটাই ঔজ্জ্বল্য যে চারপাশ যেন আলোকিত হয়ে থাকে! আর এর স্বচ্ছতার জন্য কাচের সঙ্গে তুলনা করা হয়। পাহাড়ি এলাকায় এই উদ্ভিদ নাকি পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
কিন্তু হঠাৎ 'সিকিম সুন্দরী'কে নিয়ে এত তোলপাড় কেন? আসল কথা হল, প্রায় ৩০ বছর পর নাকি সিকিমে আত্মপ্রকাশ করেছে সে। এত শীতের মরশুম কেটে গিয়েছে, একটিবারও তাকে দেখা যায়নি। হয়ত পাহাড়ের বুকে মুখ গুঁজে ঘুমিয়ে ছিল। শীতঘুম কেটে এবার আপন রূপ খুলেছে সে!
'সিকিম সুন্দরী'র রূপে মুগ্ধ শিল্পপতি আনন্দ মাহিন্দ্রা কাব্যের সঙ্গে এক তুলনা করেছেন। এক্স হ্যান্ডল পোস্টে তিনি লিখেছেন, ''ছোটবেলায় স্কুলের বায়োলজি বইতে এর কথা পড়িনি, অর্ধেক বিশ্বভ্রমণ হয়ে গেল, কোথাও দেখিনি একে। ভারতেই দেখলাম। এবার কি দেশের স্কুলগুলো সিলেবাসে এর নাম তুলবে?''
