অর্ণব আইচ: বড়দিনের রাতে দক্ষিণ শহরতলিতে মদ্যপ যুবকের অসভ্যতা! এক তরুণীকে জোর করে চুম্বনে বাধা পেয়ে তাকেই আক্রমণ করে বসল যুবক, তরুণীর গলা টিপে ধরে সে। পেশায় নিরাপত্তারক্ষী ওই মদ্যপ যুবক তরুণীকে রাস্তার পাশে নর্দমায় ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ। চোখের সামনে এই ঘটনাটি দেখে যুবককে তাড়া করেন কয়েকজন। প্রায় এক কিলোমিটার দৌড়ে ওই যুবককে দক্ষিণ কলকাতার বাঘাযতীন স্টেশনের কাছ থেকে ধরে ফেলা হয়। খবর পেয়েই ব্যবস্থা নেয় সার্ভে পার্ক থানার পুলিশ। রাস্তার উপর তরুণীর হেনস্তা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় সত্যম হালদার নামে ওই যুবক।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বেশি রাতে এই ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগকারী ওই তরুণী সার্ভে পার্কের একটি নামী শপিং মলের ফুড কোর্টের একটি দোকানের কর্মী। বড়দিনে বেশি রাত পর্যন্ত খোলা ছিল দোকানটি। তাই তাঁর কাজ শেষে বের হতে দেরি হয়ে যায়। বাড়ি যাওয়ার জন্য রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ তিনি রাস্তা পেরিয়ে সত্যজিৎ রায় মেট্রো স্টেশনের কাছে আসেন। তাঁর পিছু নিয়ে হাজির হয় অভিযুক্ত।
অভিযোগ, সে মদ্যপ অবস্থায় তরুণীকে জোর করে চুম্বন করার চেষ্টা করে। এতে ঘাবড়ে গিয়ে তাকে বাধা দেন তরুণী। রাস্তার উপরই ধস্তাধ্বস্তি হয়। তরুণীকে জাপটে ধরে সে। তরুণী প্রতিবাদ জানিয়ে সত্যমকে দূরে সরানোর চেষ্টা করেন। তখনই মদ্যপ তাঁর গলা টিপে ধরে বলে অভিযোগ। রাস্তার পাশে রাখা পাইপের উপর তরুণীকে ঠেসে ধরে চুম্বন করে অভিযুক্ত। তিনি বাঁচার চেষ্টা করলে রাস্তার পাশের একটি নর্দমায় তাঁকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। তরুণী যুবকের হাত থেকে বাঁচতে চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকার শুনে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা সেখানে চলে আসেন।
তরুণী জানিয়েছেন, লোকজন দেখে মদ্যপ সত্যম তাঁদের কাছে দাবি করে যে, ওই তরুণী তার বান্ধবী। এটা নিজেদের মধ্যে ব্যাপার। কিন্তু তরুণী নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলেন, ওই যুবককে তিনি ভালো করে চেনেনই না। তাঁরা যেন সত্যম আটকান। বেগতিক বুঝে সে দৌড়ে পালাতে থাকে। ওই তরুণী ও ওই ব্যক্তিরা তাকে তাড়া করেন। বাইপাসের রেলগেট পেরিয়ে সে বাঘাযতীন স্টেশনের দিকে যায়। তরুণী বেশি দূর দৌড়তে না পারলেও বাকি ব্যক্তিরা তাকে তাড়া করে স্টেশনে পৌঁছে যান। শেষ ট্রেন ধরে সে দক্ষিণ ২৪ পরগনার হোটর স্টেশনে নিজের বাড়িতে পালানোর ছক কষে।
যদিও ট্রেন আসার আগেই তাকে ধরে ফেলেন ওই ব্যক্তিরা। বাইপাসে নিয়ে যাওয়ার পথেই খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় সার্ভে পার্ক থানার পুলিশ। তাকে ধরে থানায় নিয়ে আসা হয়। তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পুরো ঘটনাটি জানতে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
