shono
Advertisement
Health Tips

অন্ধকারেই চোখের আরাম? বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর ছিল এই সমস্যা, কীসের জন্য হয়?

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানালেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
Published By: Suparna MajumderPosted: 04:16 PM Aug 18, 2024Updated: 04:16 PM Aug 18, 2024

বয়স যত বাড়ছে ততই অন্ধকারে চোখের আরাম হয়? উজ্জ্বল আলো চোখে পড়লেই অস্বস্তি হয় অনেকেরই। এটি একটি বিশেষ রোগ। যার দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। কখনও হালকা করে নেবেন না এই অসুখকে। এ ব্যাপারেই কথা বললেন রিজিওন্যাল ইনস্টিটিউট অফ অপথালমোলজির ডিরেক্টর ডা. অসীমকুমার ঘোষ। লিখলেন জিনিয়া সরকার

Advertisement

রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজনীতির পাশাপাশি সাহিত্য অনুরাগী মানুষ ছিলেন, সারাক্ষণ পড়াশোনা, লেখালিখির মধ্যেই থাকতেন। তবে শেষ বয়সে বেশিক্ষণ পড়তে পারতেন না। আসলে, ধীরে ধীরে চোখের বিশেষ অসুখে কাবু হয়ে পড়েন। তাই বেশি আলো পড়লে চোখে খুব কষ্ট হতো। আঁধারেই পেতেন স্বস্তি। এমনকী, টিভিও দেখতে অসুবিধা হতো, দেখার বদলে সব কিছু শুনতে পছন্দ করতেন তাই। এই অস্বস্তিকর অসুখের নাম, ওয়েট এআরএমডি (Wet AMD বা ওয়েট এজ রিলেটেড ম্যাকুলার ডিজেনারেশন)। 

ফাইল ছবি

ওয়েট এআরএমডি নিয়ে বুদ্ধবাবু এখানেই আসতেন চিকিৎসা করাতে। তবে তাঁর চোখের কর্নিয়ার অবস্থা ভালো ছিল, তাঁর ইচ্ছানুসারে চোখের কর্নিয়া তিনি দান করে গিয়েছেন।
এই ধরনের অসুখ অনেকেরই থাকে। কিন্তু না জানার কারণে সময়ে চিকিৎসা শুরু না করানোর ফলে ভুগতে হয় বেশি।

কী এই অসুখ?
ওয়েট এআরএমডিতে রেটিনায় রক্ত জমে ও রেটিনা ফুলে যায়। ম্যাক্যুলা অর্থাৎ রেটিনার যে জায়গা দিয়ে আমরা দেখি সেই স্থানটি ক্রমশ নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে থাকে, রক্ত জমতে থাকে। ফলে দেখতে সমস্যা শুরু হয়। এই সমস্যাই ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। ওঁর দুটো চোখের এই সমস্যা থাকার কারণে দেখার ক্ষেত্রে বিস্তর অসুবিধায় পড়তে হতো। এক সময় আলো বা লাইট হয়ে উঠেছিল চোখের জন্য অস্বস্তিকর।

ছবি: সংগৃহীত

কেন হয়?
অনেকেই মনে করেন অতিরিক্ত পড়াশোনা করলে বা বইমুখো হয়ে থাকলে এমন অসুখ হতে পারে। তা কিন্তু নয়। এর অন্যতম কারণ হল জিনগত সমস্যা। এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এই রোগীদের দীর্ঘকালীন ধূমপান করার অভ্যাস থাকে। যারা ছোট থেকে মাইনাস পাওয়ার পরে তাদেরও পরবর্তীকালে এই সমস্যা হতে পারে। এই ডিজেনারেটিভ চেঞ্জের জন্য নানা প্রকাশ শিরা-উপশিরা জন্মায় চোখের মধ্যে। যেখান থেকে চোখের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ হতে শুরু করে। ফলত দৃষ্টিশক্তি অনেক কমে যায়। অনেকেরই ছানি পড়ার মতো লক্ষণ প্রকাশ পায়। কিন্তু দেখা যায় আড়ালে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হয়েছে। অপুষ্টিও একটি কারণ হতে পারে। সাধারণত যাঁদের শরীরে ভিটামিনের অভাব তাঁদের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা হতে পারে। তাই ডায়েটে বিভিন্ন ভিটামিনের জোগান রাখা জরুরি।

[আরও পড়ুন: চোখের জল নিয়েও ট্রোল! নেটিজনদের তোপ রচনার, শঙ্খ কাণ্ডে দাঁড়ালেন ঋতুপর্ণার পাশে]

রোগ সারে?
এই রোগ থেকে যদি রেটিনা ফুলে যেতে শুরু করে, অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ শুরু হয় তা হলে ইনজেকশন দ্বারা চিকিৎসা করা হয়। তা হলে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হওয়ার সম্ভাবনা প্রতিহত করা সম্ভব। এই অসুখে লো ভিশন এইড বা LVA দ্বারা চিকিৎসা করা হয়। তবে ডায়াবেটিস থাকলে, বেশি বয়স্ক হলে সে ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে এই অসুখ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যদিও এই ইনজেকশনের খরচ বেশি, তবে বর্তমানে সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে এই ইনজেকশন দেওয়া হয়।



সমস্যা থাকলে আদৌ কি চক্ষুদান সম্ভব ?
রেটিনার সমস্যা ছিল বুদ্ধবাবুর। আর এই ধরনের রেটিনার সমস্যায় অপটিক নার্ভ খারাপ হয়, রোগী কম দেখতে থাকেন। কিন্তু কর্নিয়া হল চোখের উইন্ডো। যেখান থেকে আলো প্রথম প্রবেশ করে। তারপর রেটিনাকে উদ্দীপিত করে এবং ব্রেনে সংবেদন যায়। তাই রেটিনায় সমস্যা বা অপটিক নার্ভের সমস্যা থাকলেও কর্নিয়ার কার্যকারিতা যদি ঠিক থাকে তাহলে অন্য কারও কর্নিয়া প্রতিস্থাপনে সেটি নেওয়া যায় বা দান করা যায়। এতে কোনও সমস্যা হয় না। সেই কারণেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যুর পর তাঁর কর্নিয়া অন্যের চোখে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।

চক্ষুদান একটি আদর্শ কাজ, সেটা সকলেরই করা প্রয়োজন। জাতির উদ্দেশে এটি একটি দৃষ্টান্ত। চোখের সমস্যা থাকলেও তা যদি অন্যভাবে কারও উপকারে আসে তবে মৃত্যুর পর চক্ষুদান করে যান, যা অন্ধ মানুষকে আলো দেখাতে পারে।

[আরও পড়ুন: ১৮ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত Horoscope: বিবাদ-বিতর্ক কারা এড়াবেন? ফল আশানুরূপ হবে? জেনে নিন সাপ্তাহিক রাশিফল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • এই অস্বস্তিকর অসুখের নাম, ওয়েট এআরএমডি (Wet ARMD বা ওয়েট এজ রিলেটেড ম্যাকুলার ডিজেনারেশন)। 
  • বেশি আলো পড়লে চোখে খুব কষ্ট। অন্ধকারে আরাম হয়।
Advertisement