সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শীতের আগে বাজার ছেয়ে যায় এই ফলে। সুস্বাদু, একই সঙ্গে পুষ্টিগুণে ভরপুর। ভিটামিন, মিনারেলস এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের দারুণ উৎস এই ফল। সারা বছর দেখা মেলে না। তবে, শীতের মরশুমে হাতের কাছে পেলে একদম ছাড়বেন না। তবে, ফলটি কী তা জানেন কি? মাথায় দুটি কাঁটা যুক্ত এই ফলটির নাম 'পানিফল'। জলজ এই ফলের উপকারিতা অনেক। এটি ফাইবার এবং পটাশিয়ামের একটি চমৎকার উৎস। এতে ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক এবং ম্যাঙ্গানিজ-এর মতো খনিজ থাকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, পানিফলে ফ্যাট ও কোলেস্টেরল প্রায় থাকেই না। ১০০ গ্রাম পানিফলে প্রায় ৯.৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩.১ গ্রাম প্রোটিন এবং অল্প পরিমাণে ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন ই পাওয়া যায়।
কোন কোন রোগে পানিফল উপকারী?
১. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: পানিফলে থাকা উচ্চ মাত্রার পটাশিয়াম রক্তনালীকে শিথিল করে। ফলে এটি হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এই ফল।
২. হজম শক্তি বৃদ্ধি: ফাইবারের ভালো উৎস হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এটি পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
৩. শরীরে জলের ভারসাম্য রক্ষা: পানিফল প্রকৃতিগতভাবে ঠান্ডা। এটি শরীরকে শীতল রাখতে এবং ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এটি কিডনির স্বাস্থ্যের জন্যেও উপকারী।
৪. ক্লান্তি ও দুর্বলতা কাটায়: পানিফলে থাকা আয়রন এবং অন্যান্য খনিজ দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে। এটি শরীরের দুর্বলতা এবং ক্রনিক ফ্যাটিগ সিন্ড্রোম মোকাবিলায় সহায়ক।
৫. থাইরয়েডের সমস্যা: এতে আয়োডিন এবং ম্যাঙ্গানিজ থাকায়, এটি থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
৬. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: পানিফলে বিভিন্ন ধরনের পলিফেনলিক যৌগ এবং ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে, যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই যৌগগুলি শরীরের ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষয়ক্ষতি কমায় এবং কোষকে রক্ষা করে। এটি দীর্ঘমেয়াদি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
৭. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: এই ফলে ক্যালোরির পরিমাণ বেশ কম, কিন্তু এর ফাইবার ও স্টার্চের কারণে এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। ফলে ঘন ঘন খিদে পায় না।
৮. চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে: পানিফলে জিঙ্ক, ভিটামিন বি৬ এবং রাইবোফ্ল্যাভিন-এর উপস্থিতি ত্বক ও চুলের পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে। জিঙ্ক নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে এবং ত্বকের প্রদাহ কমায়।
৯. ঘুমের গুণগত মান বৃদ্ধি: কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পানিফলে থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। এই খনিজগুলি মানসিক চাপ কমিয়ে অনিদ্রা বা ঘুমের সমস্যা কমাতে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে।
১০. ডিটক্সিংয়ে ভূমিকা: পানিফলের মধ্যে থাকা জল এবং ফাইবার শরীরের টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এটি একটি প্রাকৃতিক ডিউরেটিক হিসেবে কাজ করতে পারে, যা মূত্রবর্ধক হিসেবে শরীর থেকে অতিরিক্ত জল ও বর্জ্য বের করে দিতে সাহায্য করে।
