shono
Advertisement

Breaking News

Schizophrenia

সিজোফ্রেনিয়া কি জিনগত? মগজের 'ভুলভুলাইয়া' নিয়ে জরুরি কথা জানালেন বিশেষজ্ঞ

সিজোফ্রেনিয়া মানসিক অবসাদ নয়।
Published By: Suparna MajumderPosted: 06:57 PM Jan 03, 2025Updated: 06:57 PM Jan 03, 2025

নিজে মনে কথা বলা, হাসা বা অল্পতেই রেগে যাওয়া সাধারণ ব্যাপার মনে হতে পারে, তবে মন খারাপ বা সন্দেহবাতিক হলে এগুলো গুরুত্ব দেওয়া উচিত। নিদেনপক্ষে পরিবার পরিজনকে রোগীর ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। সিজোফ্রেনিয়া নিয়ে ছেলেখেলা নয়। বলছেন ক্যালকাটা ন্যাশন্যাল মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সৃজিত ঘোষ। প্রতিবেদনটি লিখেছেন জিনিয়া সরকার

Advertisement

পরভিন ববি, সিল্ক স্মিতা, শিন্ডি বুশান--- নয়ের দশকে অনেক অভিনেত্রীর জীবনই সিজোফ্রেনিয়া নামক মানসিক ব্যাধিতে তোলপাড় হয়েছিল। কেউ বিরতি নিয়েছিলেন অভিনয় জগৎ থেকে, কাউকে আবার মানসিক চাপের কাছে জীবন বাজি রাখতে হয়েছে। শুধু অতীতেই নয়, বর্তমানে কঙ্গনা রানাউত থেকে দীপিকা পাডুকোন প্রত্যেকেরই শোনা গিয়েছে কখনও না কখনও মানসিক অবসাদের শিকার। যদিও সরাসরি সিজোফ্রেনিয়া কি না সেটা বলা না হলেও অনেক লক্ষণের তা মনে হতেও পারে। আসলে ড্রিপেশন বা মানসিক অবসাদ আর সিজোফ্রেনিয়া এক না হলেও কিছু মিল রয়েছে। তাই অনেকেই প্রাথমিকভাবে মানসিক চাপ ভেবে সিজোফ্রেনিয়া অবহেলা করে। যেটা ধীরে ধীরে অসুখকে আরও মারাত্মক অবস্থায় নিয়ে যায়। তাই প্রথমেই জানতে হবে এটা কী ধরনের মনের অসুখ।

ছবি: সংগৃহীত

কারণ 
যদি পরিবারে বাবা কিংবা মা কারও একজনের সিজোফ্রেনিয়া থাকে তবে সন্তানের এই অসুখে আক্রান্তের প্রবণতা থাকে ১২ শতাংশ। যদি দেখা যায় মা-বাবা দুজনেই আক্রান্ত তবে সন্তানের হওয়ার সম্ভাবনা ৪০-৪৫ শতাংশ। অর্থাৎ জিনগত কারণে এই অসুখ হতে পারে। এছাড়া শরীরে ডোপামিন হরমোনের তারতম্যের জন্যও এই সমস্যা হতে পারে। এটি একটি স্নায়ু রাসায়নিক পদার্থ। যার কমা-বাড়ায় এই ধরনের স্নায়বিক অসুখ শরীরে বাসা বাঁধে। এছাড়া পারিবারিক অশান্তি, বিচ্ছেদ, কোনও কারণে মনে অতিরিক্ত চাপ, মানসিক আঘাত --- এসব কারণেই সিজোফ্রেনিয়া প্রকাশ পেতে পারে। এই অসুখ মানসিক অবসাদ নয়। এক্ষেত্রে মানসিক অবসাদের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে স্নায়ুপদার্থজনিত কারণে সিজোফ্রেনিয়া হয়।

লক্ষণ
আচরণগত পরিবর্তন। আপন মনে বিড়বিড় করে কথা বলা, হাসি। কখনও হঠাৎ হঠাৎ রেগে যাওয়া, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুখের নানা অঙ্গভঙ্গি করার লক্ষণ প্রকাশ পায়।
লোকজনকে খুব বেশি সন্দেহ করার প্রবণতা প্রকাশ পায়। মনে করতে থাকেন আশেপাশের চেনা-পরিচিত লোকটাই ক্ষতি করতে পারে বা আড়ালে হয়তো তাকে নিয়েই মজা করছে-- এমন ভাব প্রকাশ পেতে পারে।
সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি অহেতুক এবং অবাস্তব জিনিসকে সত্য ভাবতে থাকেন। যেমন, সবাই তার ক্ষতি করছে, খাবারে বিষ মেশানো রয়েছে, তিনি না বললেও কেউ তার মনের গোপন কথা জেনে যাচ্ছে ইত্যাদি।
মানুষের সঙ্গ একেবারেই মিশতে না চাওয়া। কোনও কারণ ছাড়াই আত্মহত্যার চেষ্টা করা। এক জায়গায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাড়িয়ে থাকা ইত্যাদি নানা আচরণগত পরিবর্তন দেখা যায়।
কানে অযথা নানা শব্দ শুনতে শুরু করে। মনে হবে কেউ যেন পাশে কথা বলছে। অর্থাৎ একটা হ্যালুসিনেশন প্রকাশ পায়। পশুপাখির ডাক শুনতে পায়, হঠাৎ করে বিশেষ কিছুর গন্ধ পেতে পারে। যা অন্য কেউ অনুভব করবেন না শুধু রোগীই বুঝতে পারবেন।
এই সব লক্ষণগুলি ৬ মাসের বেশি কারও মধ্যে থাকলে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।

ছবি: সংগৃহীত

চিকিৎসা
সর্বপ্রথম যেটা দরকার তা হল অসুখ করেছে বা সিজোফ্রেনিয়া হয়েছে এটা আগে থেকে বুঝতে হবে। অধিকাংশ এই অসুখ করেছে সেটা বুঝতেই পারে না বা লক্ষণ দেখলে অসুখ ভেবে তা গ্রাহ্যও করে না। স্বাভাবিক ব্যাপার মনে করেন। এখানেই ভুল হয়ে যায়। অসুখ শুধুতেই নির্ণয় হলে তবে চিকিৎসার দ্বারা তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

এই রোগীদের বিশেষ কেয়ার দরকার। এদের নিয়ে বেশি সমালোচনা করা কিংবা অতিরিক্ত প্রোটেকশন, ওদের প্রতি শত্রুতা প্রকাশ করা--- কোনওটারই দরকার নেই। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। এই অসুখ ছেলেদের মধ্যে ১৮-২০ বছর বয়সে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মেয়েদের ২০ বছর বয়সের পর থেকে এই অসুখের ঝুঁকি বেশি। এই অসুখের ওষুধ রয়েছে। তাতেই একমাত্র কাজ হতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে সাইকো থেরাপি বা কাউন্সেলিংয়ে এই অসুখ সারিয়ে তোলার সুযোগ কম।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • অনেকেই প্রাথমিকভাবে মানসিক চাপ ভেবে সিজোফ্রেনিয়া অবহেলা করে।
  • যেটা ধীরে ধীরে অসুখকে আরও মারাত্মক অবস্থায় নিয়ে যায়।
Advertisement