সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পঞ্চাশ পেরিয়েও তিনি কুড়ির যুবতী! বয়েসকে হার মানানো ফিটনেস মহুয়া মৈত্রর। প্রচারে নেমে কখনও রাস্তায় হেঁটেছেন বহু ক্রোশ, কখনও বা মাঠে নেমে ফুটবল খেলেতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। রাজনীতি হোক বা রোদচশমা- কৃষ্ণনগরের সাংসদ আলাদা করে নজর কাড়তে জানেন। সারাদিনের জনসংযোগে দৌড়াদৌড়ি করতে হয় বহু জায়গায়। তার পরেও মুখে -চোখে ক্লান্তির কণামাত্র ছাপ নেই। কিন্তু এই ফিটনেসের সিক্রেটটা কী? সম্প্রতি এক সাংবাদিকের কাছে সেকথা ফাঁস করেছেন সাংসদ নিজেই। বলেন, লাঞ্চে তিনি যা খান, তা কেউ খেতে চায় না!
অধিবেশনের সময় নিয়মিত সংসদ ভবনে আসেন মহুয়া মৈত্র। কিন্তু ক্যান্টিনের খাবার না খেয়ে বাড়ি থেকেই টিফিন নিয়ে আসেন তিনি। দুপুরের মেনুতে কী কী রাখেন? জিজ্ঞেস করা হলে সাংবাদিকদের জানান, "আমি প্রায়শ একই খাবার খাই। সবচেয়ে বড় কথা হল, আমার খাবারের ভাগ কাউকে দিতে হয় না। কারণ, আমার খাবার কেউই খেতে চায় না।" কী এমন খান তিনি যা কেউ খেতে চায় না? জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, "রোজ আমি ডাল আর ঢেঁড়সের তরকারি খাই।" রাজনীতির জগতে ঢেঁড়সের প্রতি এমন ভালোবাসা সত্যিই বিরল!
ঢেঁড়স বা ভেন্ডি যে পুষ্টিগুণের আধার, তা একবাক্যে স্বীকার করেন পুষ্টিবিদেরা। এমনকী এই সবজি খাদ্যতালিকায় রাখা খুবই উপকারী বলে জানান। কতটা স্বাস্থ্যকর ঢেঁড়সের তরকারি? জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদ।
(১) হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়: ঢেঁড়সে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার (তন্তু) থাকে, যা হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ রাখে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
(২) রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ: সবজিটিতে ফাইবার এবং কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) রক্তে শর্করার শোষণকে ধীর করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
(৩) হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য: ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
(৪) ভিটামিন ও খনিজ: এটি ভিটামিন C এবং K এর ভালো উৎস। ভিটামিন C রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ভিটামিন K রক্ত জমাট বাঁধতে ও হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে।
(৫) ক্যালোরি কম: ঢেঁড়স খুব কম ক্যালোরিযুক্ত সবজি, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
অন্যদিকে প্রতিদিন ডাল খেলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা পাওয়া যায়। এটি উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের চমৎকার উৎস, যা পেশি গঠনে ও মেরামতে সহায়তা করে। ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজম ক্ষমতা বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজে পরিপূর্ণ। ডাল হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।
তাই, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় মাছ-মাংস না রাখলে স্বাস্থ্য ধরে রাখা যায় না এমনটা মোটেও নয়। বরং সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার এই অভ্যেস বিরল এবং প্রশংসনীয়।
