অরবিটাল অ্যাথেরেক্টমি পদ্ধতিতে বর্তমানে স্টেন্ট বসানো আরও নিখুঁত। হার্ট ব্লক কাটিয়ে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি আরও সফল করছে এই আধুনিক পদ্ধতি। চিকিৎসা পদ্ধতিটির সম্পর্কে বিস্তারিত জানাচ্ছেন ইন্টারভেনশনাল ডা. শুভানন রায়।
হৃদরোগের চিকিৎসায় প্রতিনিয়তই প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আসছে নতুন দিগন্ত। এক সময় যে সব জটিল হার্ট ব্লক মানেই ছিল ওপেন হার্ট সার্জারির প্রয়োজন, এখন তা অনেক সহজেই সমাধান হচ্ছে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির মাধ্যমে। তবে কিছু জটিল ব্লকেজে, বিশেষত ধমনীতে ক্যালশিয়ামের জমাট বা শক্ত প্লাক থাকলে, সাধারণ অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি যথেষ্ট নয়। এই সমস্যা দূর করতেই এসেছে আধুনিক পদ্ধতি-অরবিটাল অ্যাথেরেক্টমি।
ধমনীতে জমে থাকা শক্ত ক্যালশিয়াম বা প্লাক স্টেন্ট বসানোর পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষত বেশি বয়সি, ধূমপায়ী বা কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ব্লকেজ বেশি দেখা যায়। সাধারণ অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিতে এই ব্লক সহজে সরানো যায় না। ফলে স্টেন্ট ঠিকমতো বসানো বা খোলা সম্ভব হয় না। সেই বাধা কাটাতেই অরবিটাল অ্যাথেরেক্টমি ব্যবহৃত হচ্ছে।
অরবিটাল অ্যাথেরেক্টমির কার্যকারিতা
এই পদ্ধতিতে এক ধরনের বিশেষ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়, যার অগ্রভাগে রিং-এর মতো একটি অংশ থাকে। এই যন্ত্রটি শরীরের একটি ধমনী দিয়ে প্রবেশ করিয়ে হার্টে পৌঁছনো হয়। তার পরে সেই রিং উপবৃত্তাকারে ঘুরে ঘুরে ধমনীতে জমে থাকা ক্যালশিয়াম ধীরে ধীরে কেটে ফেলে। এতে ধমনী পরিষ্কার হয়ে যায় এবং স্টেন্ট বসানো অনেক সহজ হয়। ফলস্বরূপ অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির সাফল্যের হারও অনেক বেড়ে যায়।
অন্য পদ্ধতির তুলনায় কেন উন্নত?
রোটেশনাল অ্যাথেরেক্টমির তুলনায় অরবিটাল অ্যাথেরেক্টমিতে আরও নিখুঁতভাবে ও সম্পূর্ণরূপে ক্যালশিয়াম সরানো যায়। বিশেষ করে সব ধরনের ধমনীতে কাজ করে। যে সব ধমনী মোটা এবং যেখানে কম দৈর্ঘ্যের মধ্যে ক্যালশিয়াম জমেছে, সেখানে এই পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর।
বয়স বেশি, দীর্ঘদিন ধরে ধূমপান করছেন, কিডনির সমস্যা রয়েছে কিংবা বাইপাস সার্জারি করানো ঝুঁকিপূর্ণ- এমন রোগীদের জন্য অরবিটাল অ্যাথেরেক্টমি একটি নিরাপদ ও কার্যকর বিকল্প। হার্ট ব্লকের ক্ষেত্রে রোগী যেন সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তার জন্য এই আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা ও প্রযুক্তির সহায়তায় অনেক জটিল সমস্যাও আজ নিরসন সম্ভব।
