সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তীব্র মাথাব্যথা। সঙ্গে বমি বমি ভাব। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া। ক্লান্তি কিংবা পেট খারাপ। এই সব উপসর্গ জানান দেয় 'মাইগ্রেন অ্যাটাক'। কারও কপালের অর্ধেক অংশ জুড়ে ব্যথা হয়। কারও বা মাথার পিছনের অংশে। এমনকী মাইগ্রেন হলে চোখের চারপাশেও তীব্র ব্যথা হতে পারে। আর ব্যথা দেখা দিলেই কোলাহল বা তীব্র আলো অসহ্য হয়ে ওঠে। অতিরিক্ত স্ট্রেস, মানসিক অবসাদ, কাজের চাপ প্রভৃতি কারণে মাইগ্রেন হঠাৎ করেই শুরু হতে পারে। আর এমনটা দেখা দিলে কেউ কেউ কফি নিয়ে বসে পড়েন। যন্ত্রণা কমাতে অনেকেই এক কাপ কফিতে চুমুক দেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, কফি কি সত্যিই মাইগ্রেন সারিয়ে তোলে? নাকি এটা কেবলই একটা প্রচলিত ট্যাকটিস?
কফি কীভাবে কাজ করে?
মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে কফির নির্দিষ্ট কোনও ভূমিকা নেই। বরং কিছু ক্ষেত্রে কফি পান মাইগ্রেনকে বাড়িয়ে দিতে পারে! স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের মস্তিষ্কে অ্যাডিনোসিন নামে একটি পদার্থ আছে। এর উচ্চ মাত্রা মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে। অ্যাডিনোসিন রক্তনালীগুলিকে সাময়িকভাবে প্রসারিত করে এবং মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ কমায়। ক্যাফেইন এই অ্যাডিনোসিনের রিসেপ্টরগুলিকে ব্লক করে। ফলে রক্তনালীগুলির প্রসারণ কমে। স্নায়ুর উপর চাপ কমে এবং কিছু রোগীর ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যথা উপশম হয়। এই কারণেই মাঝে মাঝে কফি খেলে মাইগ্রেনের ব্যথা সাময়িক ও সামান্য আরাম দিতে পারে।
বিপদ কোথায়?
রোজ কফি খেলে কিন্তু কোনও লাভ হয় না। নিয়মিত কফি খেলে শরীর ক্যাফেইনে সহনশীল হয়ে ওঠে। তখন আর কোনও উপকার পাওয়া যায় না। সবচেয়ে বড় কথা, অতিরিক্ত ক্যাফেইন খেলে সেটি 'মেডুকেশন-ওভারইউজ হেডেক' তৈরি করতে পারে। অর্থাৎ, মাইগ্রেনের ওষুধের মতো ক্যাফেইনও বেশি নিলে উলটে মাথার যন্ত্রণা বাড়িয়ে দেয়!
যাঁরা ক্রনিক মাইগ্রেনে ভোগেন, তাঁরা সপ্তাহে দু'দিনের বেশি ক্যাফেইনযুক্ত কফি পান করবেন না। কফি পান করার আগে সাবধান থাকুন। কফি পান করে সাময়িক আরাম পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু নিয়মিত কফি পানে হতে পারে হিতে বিপরীত। মাইগ্রেনের চিকিৎসার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
