shono
Advertisement
Sonika Yadav

ভারোত্তোলনে পদকজয়ী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা! এমন কাজে কতটা ঝুঁকি?

জেনে নিন বিশেষজ্ঞের মত।
Published By: Buddhadeb HalderPosted: 01:53 PM Oct 29, 2025Updated: 01:53 PM Oct 29, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির কনস্টেবল সোনিকা যাদব। সম্প্রতি অংশ নেন সর্বভারতীয় পুলিশ ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায়। সেখানে ১৪৫ কিলোগ্রাম ওজন তুলে তিনি ব্রোঞ্জ জিতে নেন। কিন্তু তাজ্জব করা বিষয়টি হল, তিনি ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি যখন প্রতিযোগিতায় নামেন, তখন আগে থেকে কেউই ব্যাপারটা ধরতে পারেননি। কিন্তু যখন তিনি ডেডলিফটের জন্য এগিয়ে আসেন, তখন সকলেই তা বুঝতে পারেন। আর দর্শকরা তাঁর এই সাহস ও ইচ্ছেশক্তিকে হাততালি দিয়ে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন।

Advertisement

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ভারোত্তোলনের সেই ভিডিও সম্প্রতি অনলাইন মাধ্যমে ভাইরাল হতেই সোনিকার এই সাহসী পদক্ষেপকে কুর্নিশ জানান অনেকেই। আবার একই সঙ্গে নেটিজেনদের একাংশকে ক্ষুব্ধ হতেও দেখা যায়। অনেকেরই মন্তব্য, সোনিকা জেনে শুনে ঝুঁকি নিয়েছেন। সত্যিই কি গর্ভাবস্থায় এমন কাণ্ড ঘটানো ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

(১) ভারী ওজন তোলার সময় পেটের ভেতরের চাপ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পায়। এই চাপ সরাসরি প্লাসেন্টা-এর উপর পড়ে, যা বিপজ্জনক হতে পারে।

(২) ভারী ওজন তোলার জন্য অনেকে মুহূর্তকাল শ্বাস চেপে রাখেন। এর ফলে রক্তচাপ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এটি মা এবং ভ্রূণের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিছু সময়ের জন্য প্লাসেন্টায় রক্ত ​​প্রবাহ ব্যাহত হয়ে ভ্রুণের ক্ষতি হতে পারে।

(৩) গর্ভাবস্থায় শরীর রিল্যাক্সিন হরমোন নিঃসরণ করে, যা প্রসবের জন্য পেলভিক জয়েন্ট ও লিগামেন্টগুলিকে শিথিল করে দেয়। এই শিথিলতার কারণে ভারী ওজন তোলার সময় জয়েন্টগুলিতে আঘাত (বিশেষ করে নিতম্ব ও কোমরের জয়েন্ট) লাগতে পারে। স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকিও অনেক বেশি থাকে।

(৪) গর্ভাবস্থায় পেটের আকার বৃদ্ধির কারণে শরীরের ভারসাম্য কেন্দ্র পরিবর্তিত হয়। ভারী ওজন তোলার সময় হঠাৎ ভারসাম্য হারালে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

(৫) ভারী ওজন তোলার সময় পেটের ভেতরের চাপের ফলে পেলভিক ফ্লোর পেশীতে (শ্রোণী মেঝের পেশীগুলি) অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদী শ্রোণী মেঝের দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।

(৬) পেটের আকার বড় হওয়ায় ভারী জিনিস তুললে পিঠের নিচের অংশে তীব্র ব্যথা হতে পারে। এমনকী অন্যান্য পেশিতেও আঘাত লেগে যেতে পারে।

(৭) বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাবস্থায় ভারোত্তোলন চালিয়ে যেতে হলে অবশ্যই গাইনি বিশেষজ্ঞ এবং প্রসবপূর্ব ফিটনেস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও নিবিড় তত্ত্বাবধান প্রয়োজন। ভারী লিফটের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যার (যেমন রক্তক্ষরণ, মাথা ঘোরা, পেটে ব্যথা ইত্যাদি) সামান্যতম লক্ষণ দেখা দিলেও সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়াম বন্ধ করা উচিত।

সোনিকা যেহেতু বহু আগে থেকেই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে নিজের প্রশিক্ষণ চালিয়ে গিয়েছেন, তাই তিনি ঝুঁকিমুক্ত। তাঁর এই কৃতিত্ব সত্যই প্রশংসাযোগ্য। দিল্লি পুলিশ যেমনটা তাঁকে সম্মান জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, 'সীমা ও বাধাকে অতিক্রমকারী শক্তি'।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ভারোত্তোলনের ভিডিও সম্প্রতি অনলাইন মাধ্যমে ভাইরাল হতেই সোনিকার এই সাহসী পদক্ষেপকে কুর্নিশ জানান অনেকেই।
  • আবার একই সঙ্গে নেটিজেনদের একাংশকে ক্ষুব্ধ হতেও দেখা যায়।
  • সত্যিই কি গর্ভাবস্থায় এমন কাণ্ড ঘটানো ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে?
Advertisement