সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বয়েসের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের একেক পরিবর্তন আসে। মেয়েদের বয়ঃসন্ধিতে শুরু হওয়া পিরিয়ড একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর বন্ধ হয়। তাকে বলে মেনোপজ। সাধারণত পঞ্চাশের মধ্যে বেশির ভাগ মহিলার মধ্যে এটি ঘটতে দেখা যায়। কিন্তু তার আগেই ৪০ বছরের আশেপাশে মহিলাদের শরীরে মেনোপজের কিছু আগে কয়েকটি লক্ষণ ফুটে ওঠে। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে 'পেরিমেনোপজ'। এই সময় ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা সাধারণত কমতে থাকে। শুরুতে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা হঠাৎ করে অতিরিক্ত ওঠানামা করে—কখনও বাড়ে, আবার কখনও খুব দ্রুত কমে যায়। কিন্তু সামগ্রিকভাবে, ইস্ট্রোজেন হ্রাস পায়। ঠিক কত দিন অবধি এই অবস্থা স্থায়ী হবে তা নির্ভর করে বংশগতির ধারার উপর। নিয়মিত শরীরচর্চার মধ্যে থাকলে লক্ষণগুলি ফুটে উঠতে সময় লাগে। কিন্তু হরমোনের সমস্যা কিংবা অন্যান্য অসুখের ক্ষেত্রে সময়ের আগেই দেখা দিতে পারে 'পেরিমেনোপজ'। মহিলাদের এই বিশেষ অবস্থায় ঠিক কী কী লক্ষণ দেখা দেয়?
১) অনিয়মিত ঋতুস্রাব হতে দেখা যায়। কারও ক্ষেত্রে যেমন একাধিকবার ব্লিডিং হয়, ঠিক তেমনই কারও ক্ষেত্রে একদমই কম হয়। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে তিন-চার মাস পর্যন্ত পিরিয়ড বন্ধ থাকে। তবে টানা ১২ মাস পিরিয়ড বন্ধ থাকলে তা মেনোপজ কিনা যাচাই করে নিন। এক্ষেত্রে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।
২) হঠাৎ করে শরীর প্রচণ্ড গরম হয়ে যাচ্ছে? বিশেষ করে মুখ, মাথা ও গলায় উষ্ণতা অনুভব করছেন? কান, মাথা জ্বালা করতে শুরু করে। রাতে ঘন ঘন ঘুম ভেঙে যাওয়া কিংবা ঘামে ভিজে রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়াও পেরিমেনোপজের লক্ষণ।
৩) হঠাৎ করে মন খারাপ, উদ্বেগ, খিটখিটে মেজাজ বা বিষণ্ণতা তৈরি হতে দেখা যায়।
৪) মাথায় চুল পড়তে থাকা কিংবা ত্বক খসখসে হওয়া হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জন্য দেখা দেয়।
৫) যোনির ভেতরে শুষ্কতা এবং চুলকানি দেখা দেয়। যৌন মিলনের সময় অস্বস্তি বা ব্যথা দেখা দিতে পারে।
৬) ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ বা মূত্রাশয়ের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
৭) যৌন ইচ্ছে ক্রমশ কমে আসে।
৮) স্তনে ব্যথা বা অস্বস্তি।
৯) হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ধীরে ধীরে হাড়ের ক্ষয় শুরু হয়।
১০) কোনও কারণ ছাড়াই সব সময় ক্লান্তি বোধ।
এই লক্ষণগুলি দেখলে অবহেলা করবেন না। ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। কারণ, এক্ষেত্রে অস্টিওপরোসিস, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক প্রভৃতির ঝুঁকি বাড়ে।
