shono
Advertisement
Prescription Plus

ঘুমের মধ্যেই হতে পারে হার্ট ফেলিওর! অবহেলা নয়, কোন উপসর্গে সচেতন হবেন?

জানাচ্ছেন বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট।
Published By: Buddhadeb HalderPosted: 05:28 PM Nov 03, 2025Updated: 06:23 PM Nov 04, 2025

হার্ট ফেলিওর এখন আর শুধুই প্রবীণদের নয়। যে কারও, যে কোনও বয়সে দেখা দিচ্ছে এই জটিল অবস্থা। এটি এমন একটি রোগ, যার প্রভাব ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়। তাই হার্ট ফেলিওরকে চেনা ও তার আগাম প্রতিরোধ করাই সচেতন হওয়া একমাত্র উপায়। জানাচ্ছেন কার্ডিওলজিস্ট ডা. সুমন্ত চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

হার্ট ফেলিওর একটি স্পেকট্রাম রোগ। অর্থাৎ এর লক্ষণ ও প্রভাব ব্যক্তিভেদে, বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। হার্ট আমাদের দেহের 'জেনারেটর', যার কাজ শরীরের প্রতিটি কোষে রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি পৌঁছে দেওয়া। এই রক্ত সরবরাহ নির্ভর করে হার্টের সঠিক পাম্পিং ক্ষমতার উপর।

যখন হার্ট তার স্বাভাবিক চাপ ও গতিতে রক্ত পাম্প করতে পারে না, কিংবা শরীরের চাহিদা মেটাতে পেছনের চাপ বা হার্ট রেট বাড়াতে হয়, তখনই তাকে হার্ট ফেলিওর বলা হয়।

যদি হার্ট পিছনের চাপ ঠিকভাবে না সামলে উঠতে পারে, তা হলে ফুসফুসে রক্ত জমা হতে শুরু করে। ফলে ফুসফুসের পিছনের শিরাতন্ত্র (ভেনাস সিস্টেম) ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এবং ধীরে ধীরে শরীরে দেখা দেয় নানা জটিলতা- হাত-পা ফুলে যাওয়া বা অবশ হয়ে যাওয়া, লিভারে জল জমে পেট ফুলে ওঠা, ক্ষুধামান্দ্য, পেট ব্যথা, এমনকী প্লীহার কার্যক্ষমতা হারিয়ে যাওয়া।

অন্যদিকে, সামনের দিকে চাপ কম থাকলে পর্যাপ্ত রক্ত ও অক্সিজেন পৌঁছয় না মস্তিষ্ক, কিডনি ও অন্যান্য অঙ্গে। মাথা ঝিমঝিম করা, কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস, বা পা-অবশ হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।

হার্ট ফেলিওরকে দু'ভাগে ভাগ করা হয়
Reduced Ejection Fraction (HFrEF): যেখানে হার্টের পাম্পিং ক্ষমতা কমে যায়।
Preserved Ejection Fraction (HFpEF): যেখানে হার্টের পাম্পিং ক্ষমতা স্বাভাবিক থাকলেও চাপ বেড়ে গিয়ে কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়।

নারী না কি পুরুষ কাদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি?
বিশ্বজুড়ে পুরুষদের মধ্যে হার্ট ফেলিওরের প্রকোপ বেশি, এবং তাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় Reduced Ejection Fraction। কারণ হিসাবে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, ধূমপান ও মদ্যপানের প্রবণতা। ফলে হার্ট অ্যাটাকের পর হার্টের একাধিক দেওয়াল নষ্ট হয়ে গিয়ে পাম্পিং ক্ষমতা কমে যায়।

মহিলাদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে Preserved Ejection Fraction বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে ৬০ বছরের পর, বয়সজনিত নানা পরিবর্তনের কারণে হার্টের উপর চাপ বাড়ে, যার ফলে তারা হার্ট ফেলিওরের শিকার হন। তবে পুরুষদের তুলনায় সংখ্যায় কম।

প্রতিরোধই উপায়
হার্ট অ্যাটাক ও হার্ট ফেলিওর-উভয় ক্ষেত্রেই প্রথম থেকেই চিকিৎসা শুরু করলে মৃত্যু বা জটিলতা অনেকটাই কমানো সম্ভব। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিস, প্রেশার, ওজন বৃদ্ধি, থাইরয়েড, ধূমপান বা মদ্যপানের মতো কারণও বেড়ে চলে। তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, জীবনযাত্রায় নিয়ম ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

সতর্ক থাকুন, কারণ সুস্থ হৃদয়ই জীবনকে দীর্ঘায়ু ও গতিময় করে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • হার্ট ফেলিওরকে চেনা ও তার আগাম প্রতিরোধ করাই সচেতন হওয়ার একমাত্র উপায়।
  • বিশ্বজুড়ে পুরুষদের মধ্যে হার্ট ফেলিওরের প্রকোপ বেশি।
  • প্রথম থেকেই চিকিৎসা শুরু করলে মৃত্যু বা জটিলতা অনেকটাই কমানো সম্ভব।
Advertisement