shono
Advertisement
Breast Cancer

'সন্তানদের জন্য বাঁচতেই হবে', ইচ্ছশক্তিতেই স্তন ক্যানসার জয়, জীবনের মূলস্রোতে ইসরোর বিজ্ঞানী

এই হার না-মানা মনোবল এখন অনেকের প্রেরণা হয়ে উঠেছে।
Published By: Buddhadeb HalderPosted: 05:25 PM Oct 31, 2025Updated: 05:25 PM Oct 31, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইসরোর সিনিয়র সায়েন্টিস্ট রিঙ্কু আগরওয়াল। তিনি স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার, আহমেদাবাদের বিভাগীয় প্রধান। বরাবরই দৃঢ় মানসিকতার মানুষ। ২০১৩ সালে তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এর আগে ২০০৭ সালে আইভিএফ-এর মাধ্যমে তিনি যমজ সন্তানের জন্ম দেন। তাদের বয়স যখন ছয়, তখনই এই মানসিক ধাক্কা তাঁর ব্যক্তিগত জীবনকে ওলটপালট করে দেয়। যদিও ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পরও তাঁর মনোবল ভাঙেনি। বরং না-হারা মানসিকতায় ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছেন তিনি।

Advertisement

প্রতীকী ছবি

চিকিৎসা করাতে গিয়ে নানা অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তিনি। তাঁর কথায়, "ছোটবেলা থেকেই আমি আমার চুলের প্রতি খুব যত্নশীল ছিলাম। এমনকী চুল ছিল আমার সৌন্দর্যের অন্যতম প্রধান চাবিকাঠি। আর চিকিৎসার সময় যখন আমাকে চুল কাটতে বলা হল, তখন বেশ মর্মাহত হয়েছিলাম। কারণ আমার কাছে চুল হারানোটা ছিল খুব স্পর্শকাতর একটা বিষয়। আর এ জন্যই আমি ছোট করে চুল কেটেছিলাম। চুল হারানোর ভয়ে আমি যতটা আতঙ্কিত হয়েছিলাম, কেমোথেরাপির জন্য ততটাও ছিলাম না।"

চিকিৎসাকালীন যে জীবনযন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে তিনি গিয়েছেন, সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে বলেন, প্রথম দিকে শরীরের ডান অংশটা ভারী লাগত। হাত তুললে ব্যথা লাগত তাঁর। তিনি ভাবতেন, বাচ্চারা তাঁর হাতে মাথা রেখে ঘুমায় বলেই এমন হচ্ছে। পরে তিনি ইসরোর নিজস্ব ডাক্তারকে দেখান। ডাক্তার ম্যামোগ্রাফির পরামর্শ দেন। ক্যানসার ধরা পড়ার পরই তাঁর প্রথম প্রশ্ন ছিল—"আমাকে কি কেমো নিতে হবে?" কারণ, তিনি জানতেন কেমো নিলেই চুল হারাবেন।

চিকিৎসা শুরু হলে তাঁর চুল ঝরতে শুরু করে। তিনি বাড়ির পরিচারককে সেই চুল ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করতে দিতেন না। তিনি নিজের হাতে তুলে নিয়ে চুল সরাতেন। স্তন হারানোর চেয়েও চুল হারানো তাঁর জন্য ছিল সবচেয়ে কঠিন মানসিক ক্ষত। তবে তিনি মনস্থির করে ফেলেন, "সন্তানদের জন্য আমাকে বাঁচতেই হবে এবং সুস্থ হতেই হবে।"

প্রতীকী ছবি

২০১৩ সালের অক্টোবরে তাঁর ডান স্তন মাস্টেকটমি করে বাদ দেওয়া হয়। সেই সময় তিনি রিকনস্ট্রাকশন করাননি। পরে তিনি কৃত্রিম স্তন ব্যবহার করেন।
মাস্টেকটমির পরে, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকেই তিনি আবার অফিসে যেতে শুরু করেন। এই সময়েই তিনি NISAR মিশনের হার্ডওয়্যার ডিজাইনের কাজ শুরু করছিলেন। এমনকী রেডিয়েশন চিকিৎসার পরেও তিনি অফিসে ফিরে আসতেন।

চিকিৎসা শেষ হওয়ার পর ২০১৫ সালে তিনি Earth Observation Satellite (EOS) সিরিজের প্রজেক্ট ম্যানেজার হন। পরবর্তীতে তিনি চন্দ্রযান-৩ মিশনের বিক্রম ল্যান্ডার তৈরির কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। এই সমস্ত কাজ তাঁকে মানসিক শান্তি ও সাহস যুগিয়েছে। তিনি মনে করেন, এই অভিজ্ঞতা তাঁর জীবনকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করেছে।

আহমেদাবাদের অ্যাপোলো ক্যানসার সেন্টারের ব্রেস্ট এবং অনকোপ্লাস্টিক সার্জন বিভাগের প্রধান ডাঃ অনঘা জোপের মতে, ভারতে স্তন ক্যানসার মোট ক্যানসারের ১৩.৬ শতাংশ। রিঙ্কু আগরওয়াল এখন ক্যানসার সচেতনতার প্রচারক। তিনি মনে করিয়ে দেন, ভারতে বেশিরভাগ রোগী দেরিতে চিকিৎসকের কাছে পৌঁছান। তাই সকলেরই আগাম সচেতন (Breast Cancer Awareness Month) হওয়া প্রয়োজন।

(স্তন ক্যানসারের সচেতনতায় বিশেষ উদ্যোগ সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর। এই মারণ রোগে আক্রান্ত এবং জয়ীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে আজ, ৩১ অক্টোবর গোলাপী রঙে বদলে যাচ্ছে আমাদের ওয়েবসাইট। স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতন হোন, অন্যকে সচেতন করুন।)

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ২০১৩ সালে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন ইসরোর সিনিয়র সায়েন্টিস্ট রিঙ্কু আগরওয়াল।
  • না-হারা মানসিকতায় ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছেন তিনি।
  • রিঙ্কু আগরওয়াল এখন ক্যানসার সচেতনতার প্রচারক।
Advertisement