পিসিওডি বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ। ভারতীয় মহিলাদের প্রায় ২২.৫ শতাংশ এই সমস্যায় আক্রান্ত। এটি একটি হরমোনজনিত সমস্যা। প্রজননক্ষম মহিলাদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ আজকাল অনেক বেশি। সময়মতো চিকিৎসা না হলে নানারকম শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এই রোগ এবং এর চিকিৎসা নিয়ে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে একান্ত সাক্ষাৎকারে বিশদে জানালেন বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ তনুকা দাশগুপ্ত।
পিসিওডি কী ও কেন হয়?
পিসিওডি রোগের কারণগুলি খানিকটা জেনেটিক (বংশগত), খানিকটা পরিবেশগত এবং অনেকটা লাইফস্টাইল ডিসঅর্ডার-এর জন্য ঘটে। পরিবারে যদি এই রোগের ইতিহাস থাকে, তবে অন্যদের ক্ষেত্রে এর ঝুঁকি থেকে যায়। মূলত ভুল জীবনযাত্রার জন্যই পিসিওডি বেশি হয়। এক্ষেত্রে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। ডিম্বাশয়গুলো কিছুটা বড় হয়ে যায়। ডিম্বাশয়ের বাইরের দিকে তরল-ভর্তি ছোট ছোট থলি বা সিস্ট তৈরি হয়। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে ডিম্বাশয় নিয়মিত ডিম্বস্ফুটন ঘটাতে পারে না। এর সঙ্গে প্রায়ই পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (PCOS) শব্দটি ব্যবহার করা হয়, যদিও দুটি কিছুতা আলাদা।
(১) মাসিক চক্রের সময় এলোমেলো হয়ে যাওয়া।
(২) শরীরের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া।
(৩) মুখে দাড়ি বা শরীরের অন্যান্য অংশে অস্বাভাবিক লোম গজানো।
(৪) মাসিকের আগে বা মাসিক চলাকালীন অসহ্য যন্ত্রণা।
রোগীরা যখন এই লক্ষণগুলি নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন, তখন প্রথমে পরীক্ষা করে দেখা হয় ডিম্বাশয়ে সিস্ট আছে কিনা। ডাঃ দাশগুপ্ত জানান, পিরিয়ডসের সময় জরায়ু সংকুচিত হলে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হতে পারে। নার্ভ সাপ্লাই বা নার্ভ ঘনীভূত হওয়ার কারণে এই তীব্র ব্যথা হয়। এই তীব্র ব্যথা নিয়ে আসা রোগীর ক্ষেত্রে টিউমার বা সিস্টের উপস্থিতি আছে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখা জরুরি।
চিকিৎসা পদ্ধতি
পিসিওডি-এর চিকিৎসা মূলত লক্ষণ ও রোগীর অবস্থার ওপর নির্ভর করে। পেটের তীব্র ব্যথা কমাতে প্রথমে ওষুধের মাধ্যমে জরায়ুর সংকোচন কমানো হয়। পিসিওডি যেহেতু হরমোনজনিত সমস্যা, তাই হরমোনের ভারসাম্য ফেরাতে হরমোন থেরাপি দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞের মতে, লাইফস্টাইল পরিবর্তন, অর্থাৎ সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত শরীরচর্চা এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আনার প্রধান উপায়। ডাক্তারের সঠিক নির্দেশ মেনে চললে পিসিওডি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
