সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিভাজনের রাজনীতির বিপরীতে সম্প্রীতির ভারতও রয়েছে। ৭৮ বছরের স্বাধীন দেশে একথা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। যার নজির রয়েছে ভারতের নানা প্রান্তে। যেমন কোথাও হিন্দুদের মন্দির তৈরিতে জমি দিয়েছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা। আবার কোথাও এক প্রাঙ্গণে পাশাপাশি রয়েছে কালীমন্দির ও পিরবাবার ধাম। বিভিন্ন উৎসবে একসঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ।
স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়ে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসকরা সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরি করার জন্য হাজারো চেষ্টা করেছিল। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সফল হয়েছে তারা। বিভাজন ঘটেছে। কিন্তু মুসলিমের কবরে মাটি দিয়েছেন হিন্দুরা, আবার হিন্দুদের শেষযাত্রায় কাঁধ দিয়েছেন কোনও মুসলিম। এমন খবরও শিরোনামে উঠে আসে। আজকের দিনেও ধর্ম, বর্ণ, জাতি যে মানুষের উর্ধ্বে নয় তার জলজ্যান্ত নিদর্শন কোচবিহার শহরের অদূরে অবস্থিত দেওয়ানহাট গ্রাম। সেখানকার এক এলাকায় পাশাপাশি রয়েছে কালীমন্দির এবং পিরবাবার ধাম। ছোট-বড় যে কোনও শুভ কাজে হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষই মন্দির এবং পিরের ধামে পুজো দেন, প্রার্থনা করেন। দীপাবলি উৎসবে পিরবাবার ঘরেও প্রদীপ জ্বলে। মিষ্টি মুখ করে একসঙ্গে চলে উৎসব উদযাপন। এই রীতি চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে।
আবার এরকমই এক ধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণ কাশ্মীরের রিয়াসি গ্রামের কনসি পাটটা এলাকা। সেখানে গুপ্ত কাশী-গৌরী শঙ্কর নামে একটি মন্দির রয়েছে। যা অন্তত ৫০০ বছরের পুরনো। কিন্তু এই ধর্মীয় স্থানটিতে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত কোনও রাস্তা নেই। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তা তৈরি নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে আলোচনা চলছিল। ওই এলাকারই দুই বাসিন্দা হলেন গোলাম রসুল ও গোলাম মহম্মদ। তাঁরাই এই মন্দিরটির সামনে রাস্তা তৈরি করার জন্য প্রায় চার কানাল জমি দান করেছেন। এই জমির উপরই ১২০০ মিটার দীর্ঘ পথ তৈরি হবে। শুধু তাই নয় মন্দিরটির রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও নজর দিয়েছেন তাঁরা।
সম্প্রীতির এই আবহেই আগামী ১৫ আগস্ট উদযাপিত হতে চলেছে ৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস। এদিনই ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের শিকল ভেঙে মুক্তি ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ভারতীয়রা। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে সেজে উঠছে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীকা। এবছর স্বাধীনতা দিবসের থিম 'বিকশিত ভারত।' এছাড়াও ১৫ আগস্টের আগে ‘হর ঘর তেরঙ্গা’ কর্মসূচির আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি নিজের সব সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলেই ‘প্রোফাইল পিকচার’ বা ‘ডিসপ্লে পিকচার’ বদলে ফেলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নিজের ছবির বদলে সেখানে শোভা পাচ্ছে তেরঙ্গা।