নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বৃষ্টি হয়নি। ঝলমলে রোদ উঠেছিল। একেবারে পরিষ্কার আকাশ ছিল সারাটা দিন। এমন দিনে ধুমধাম করে তারা মায়ের আবির্ভাব দিবস পালিত হল তারাপীঠ মন্দিরে (Tarapith Temple)। ভক্তদের ভিড় উপচে পড়েছিল মন্দির চত্বরে। মায়ের দর্শন পেয়ে খুশি প্রত্যেকে।
কথিত আছে, পাল রাজত্বের সময় জয় দত্ত সওদাগর স্বপ্নাদেশ পান। আশ্বিন মাসের শুক্লা চতুর্দশীতেই তারাপীঠ মহাশ্মশানের শ্বেতশিমূল গাছের তলা থেকে মায়ের মূর্তি এনে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। তাই এই দিনটিই মায়ের আবির্ভাব দিবস হিসেবে পালিত হয়। প্রথা মেনে এদিন সূর্যোদয়ের পরে মা প্রতিমা গর্ভগৃহ থেকে বের করে এনে ‘জীবিত কুণ্ড’-এর জল দিয়ে স্নান করানো হয়। তারপর রাজবেশ পরিয়ে মন্দির চত্বরের বিরাম মঞ্চে রাখা হয় মায়ের মূর্তি।
[আরও পড়ুন: জীবনে সুখসমৃদ্ধি চান? লক্ষ্মীপুজোয় এই কাজগুলি ভুলেও করবেন না]
বছরের এই একটা দিন গর্ভগৃহের বাইরে তারা মায়ের দর্শন পান ভক্তরা। সেই আশাতেই অনেকে মন্দিরে ভিড় জমিয়েছিলেন। ভিড় সামলাতে মন্দিরের ন’টি গেটই এদিন খোলা রাখা হয়। ভক্তরা রাজবেশে মা তারার দর্শন করেন। উল্লেখ্য, বিশেষ এই দিনে মা তারার পশ্চিম মুখে বসানো হয়। ঝাড়খণ্ডের মৌলুটি গ্রামে রয়েছে তারা মায়ের বোন মৌলক্ষ্যা দেবী অধিষ্ঠান। কথিত আছে, এই চতুর্দশীতেই মুখোমুখি বসে কথা বলে দুই বোন। যেহেতু মৌলাক্ষাদেবী পশ্চিমমুখী, সেই কারণে তারা মাকেও (Maa Tara) বছরের এই একটি দিন পশ্চিম মুখ অর্থাৎ শ্মশানের দিকে মুখ করে বসানো হয়।
এদিন তারা মাকে ফলাহার নিবেদন করা হয়। তাই মন্দিরের সেবায়েতরাও ফলাহারেই থাকেন। দিনের শেষে মায়ের মূর্তি আবার গর্ভগৃহে ফেরানো হয়। সেখানে আবার স্নান করিয়ে দেওয়া হয় মহাভোগ। সেই ভোগে অন্ন, মাছ, মাংস থাকে। মায়ের ভোগের পর সেবায়েতরা প্রসাদ গ্রহণ করেন। অনেকে আবার এদিন মন্দির চত্বরে বিজয়াও সেরেছেন। নতুন কাজ শুরুর জন্য মায়ের কাছে করেছেন প্রার্থনা।